কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শেরপুর জেলার বিভিন্ন বাজার ও কামার পল্লিতে টুং টাং শব্দে দা, বঁটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা।
আর এ ঈদ সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ যেমন : চাকু, দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়েই চলচ্ছে। ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে এ কর্মব্যস্ততা। তবে কয়লা, লোহাসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো লাভ নেই এ ব্যবসায়।
কিন্তু পূর্ব পুরুষের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান। অনেকে পুঁজি সংকটে ব্যবসা ছাড়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়াও পরিশ্রমের তুলনায় এ পেশায় আয় ও সম্মান দুটোয় কম। তাই অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
কামাররা জানান, একসময় তাদের বেশ কদর ছিল, বর্তমানে তা আর নেই। এখন হাতে তৈরি জিনিসের কদর কমে গেছে। তাই সারা বছর তেমন কোনো কাজ থাকে না। তবে ধান কাটার মৌসুম ও কোরবানি উপলক্ষে তাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় তাদের দৈনিক ১ হাজার থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় হলেও, ব্যয় বাদে তাদের হাতে থাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
বছরের অন্য দিনগুলোয় তেমন কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাতে হলেও কোরবানির ঈদের সময়টাতে তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। এ সময়টাতে তাই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হয় তাদের। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে তাদের জিনিসপত্রের কেনা-বেচা বেড়ে যায়। এ থেকে অর্জিত টাকায় সারা বছরের খোরাক জোগাড় করেন।
এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মৌসুমি চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারিও বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার লোহার দাম অনেক বেশি হওয়ায় লোহার তৈরি জিনিসের দামও বেড়েছে। দা ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, ছুরি ছোট ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, বঁটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, চাপাতি ১,০০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা করে বেচা-কেনা হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতারা জানান, সারাবছরই তারা দা, বঁটি, চাকু, ছুরি বিক্রি করেন। কিন্তু কোরবানির মৌসুমেই এসব সরঞ্জামের চাহিদা বেশি থাকায় এবারও বিক্রি হচ্ছে অনেক। তবে কয়লা ও লোহার দাম খানিকটা বেড়ে যাওয়ায়, কামারদের কাছ থেকে খানিকটা বেশি দামে এসব জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। ফলে কিছুটা বেশি দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।
মন্তব্য করুন