গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে শ্রমিক হত্যার বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিক নির্যাতন- হয়রানি বন্ধ এবং বাঁচার মতো বাজার ও মজুরির দাবিতে সমাবেশ ও শোক র্যালি করেছে ‘কর্মজীবী নারী’ সংগঠন। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে কর্মজীবী নারীর সহসভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলের সভাপতিত্বে ও সমন্বয়ক রাজীব আহমেদের সঞ্চালনায় এ সমাবেশ ও শোক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কর্মজীবী নারীর সংগঠক নার্গিস আক্তার, শেখ শাহানাজ, রাবেয়া আক্তার, হুরমত আলী, বিভাস কুমার মন্ডল, ফারহানা আফরিন তিথি ও কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক হাছিনা আক্তার। আরও বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক জোনাকি এবং রিয়া।
সভাপতির বক্তব্যে উম্মে হাসান ঝলমল বলেন, আমাদের দাবি, শ্রমিক হত্যার বিচার, স্থিতিশীল বাজার এবং বাঁচার মতো মজুরি। সরকার পক্ষ এবং সরকার সংশ্লিষ্ট সব মহলকে এই দাবিতে সমর্থন করতে হবে তবেই দাবি আদায় হবে। আমার শ্রমিক ভাই বোনেরা কারখানা ভাঙচুরে লিপ্ত ছিল না, একদল গুন্ডা বাহিনী এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করেছে আর গ্রেপ্তার হয়েছে, গুলি খেয়েছে আমার শ্রমিক ভাইবোনেরা। আমার বোন আন্জুয়ারা ও ভাই রাসেলের হত্যার বিচার চাই।
এ সময় তারা শ্রমিকদের ওপর হামলা-মামলা, গুম ও গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানান। তারা আরও বলেন, সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য যে রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করবে তার যেন সুষম বণ্টন হয়। রেশনিং বণ্টনে সরকারের নজরদারির জোর দাবি করেন তারা। এ ছাড়া মজুরি ঘোষণার পরপরই বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি রুখতে প্রতি স্কয়ার ফুট অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করাসহ সরকারকে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিটি ও নীতিমালা গঠনের আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় শ্রম আইন-২০২৩ সংশোধনীতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট কিনা- সেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, যে মজুরি বোর্ড শ্রমিকের পক্ষে কাজ করে না, মালিক পক্ষের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তৈরি হয় সেই মজুরি বোর্ড আমরা চাই না। এই মুহূর্তে স্থিতিশীল বাজার ও বাঁচার মতো মজুরি প্রণয়ন করা অত্যন্ত প্রয়োজন, নয়তো পুরো অর্থনীতি স্ট্রাকচারাল কিলিংয়ের দিকে এগোবে।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা বলেন, বেতন বাড়ায় আমরা খুশি কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখি বাড়িভাড়া বেড়ে গেছে। তাই তারা সরকারকে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বলেন। তারা আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করলে পুলিশ আমাদের গুলি করে, হামলা ও গ্রেপ্তার করে, গার্মেন্টস শ্রমিক বলে কি আমরা মানুষ না, আমাদের কি কথা বলার অধিকার নেই ?’
এ সময় নেতৃবৃন্দরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে শ্রমিক হত্যার বিচার, বাজার নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিক নির্যাতন-হয়রানি বন্ধ ও গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানান।
মন্তব্য করুন