দেবাশীষ মন্ডল আশীষ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দপ্তরির

১৯নং পশ্চিম সোহাগদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা
১৯নং পশ্চিম সোহাগদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা

পিরোজপুর নেছারাবাদের ১৯নং পশ্চিম সোহাগদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মো. মিজানুর রহমান নামে এক দপ্তরি সাত মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন-ভাতা তুলতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মিজানুর রহমান ২০২৩ সালের গত মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলতানা পারভীনের ভাষ্যনুযায়ী দপ্তরি মিজানুর রহমান সাত মাস পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে দীর্ঘ সময়ে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে তার।

এদিকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় দপ্তরি মিজানের স্বাক্ষরের বিষয়ে কিছুই জানেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসাৎ সুলতানা পারভীন। তিনি বলেছেন, দপ্তরির হাজিরা খাতা থাকে সভাপতির কাছে। এখন শুনেছি দপ্তরি মিজান নাকি অসুস্থ। তাই সভাপতির নির্দেশে রেজুলেশন করে মিজান একটি মেডিকেল রিপোর্ট এনে বেতন তোলার জন্য সব কাগজ নাকি উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, গত মে মাসে হঠাৎ মিজান কিছু না বলে বিদ্যালয় থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়। কিছুদিন পরেও মিজান বিদ্যালয়ে না আসায় বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। সেই থেকে মিজান বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তবে গেল আগস্ট মাসে বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. জাকারিয়া শরীফ এসে বলেন মিজান অসুস্থ ছিল। সে একটি মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে বিদ্যালয়ে আসবে। আপনি রেজুলেশন করে মিজানকে বিদ্যালয়ে অন্তুভুক্ত করুন। মিজান মেডিকেল রিপোর্ট এবং আমাদের রেজুলেশন কাগজ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে উপস্থাপন করেছে। তবে মিজান এখনো বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছে।

এ ব্যাপারে দপ্তরি মিজানের সাথে দেখা করে কথা বলার জন্য বিদ্যালয়ে গেলেও দেখা মেলেনি তার। একপর্যায়ে তার ব্যবহৃত ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়ার পরে ফোন রিসিভ করেন। ফোন রিসিভ করে তিনি বলেন আমি এ বিষয়ে পরে কথা বলব। আমি একটু ব্যস্ত এই বলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. জাকারিয়া শরীফ বলেন, মিজান অসুস্থ ছিল। তাই মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিদ্যালয়ে আসেনি। আগস্টে সে একটি মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে বিদ্যালয়ে এসেছে। বিদ্যালয়ের রেজুলেশন কপি ও মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে সে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং পিরোজপুর যাচ্ছে। তাই এই অফিসিয়ালি কাজের জন্য মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ে আসতে তার দেরি হচ্ছে। মিজানের বিদ্যালয়ের এসব অফিসিয়ালি কাজ করা এটা কি বিদ্যালয়ের কাজ নয়; বলে জানান সভাপতি জাকারিয়া শরীফ। মিজান স্কুলে না এসেও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করেন কিভাবে পুনরায় জানতে চাইলে, তিনি বলেন হাজিরা খাতা আমার কাছে থাকে না। ওটা প্রধান শিক্ষক জানেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন খলীফা জানান, ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি গত মে মাস থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। এ মর্মে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা পারভীন আমাকে লিখিতভাবে অবগত করেন। আমি তার আলোকে মিজানকে একটি শোকজ করে সাত কর্মদিবসের মধ্য কৈফিয়াৎ চেয়েছিলাম। মিজান তার কোনো জবাব দেয়নি। হঠাৎ গত আগস্ট মাসে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির রেজুলশন এবং মেডিকেল রিপোর্ট এনে মিজান বেতন-ভাতা তোলার জন্য আমার কাছে কাগজ দিয়েছে। আমি সব কাগজ আমার ঊর্ধ্বতন বরাবর প্রেরণ করে দিক নির্দেশনা চাইব। তারা যে নির্দেশনা দেয় আমি সেই আলোকে কাজ করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভয়ে ভারত ছাড়তে চাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা

পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো পিএসএল

আইভীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ

যমুনার সামনে তৈরি হচ্ছে আ.লীগ নিষিদ্ধের মঞ্চ

বিমানে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে ট্রাম্প প্রশাসন

পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা, ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা

ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা, অস্বীকার পাকিস্তানের

পাকিস্তানে আরেকটি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত

‘৯ মাসেও গণহত্যাকারী দল নিষিদ্ধ হলো না কেন’

১০

বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আবদুল্লাহর

১১

এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা / নিহত ৪ জনের দুজন ছিলেন মসজিদের ইমাম

১২

রাতে শিবির মাঠে নামায় পাল্টে গেল দৃশ্যপট

১৩

যমুনার সামনে রাতভর যা যা হলো

১৪

কয়টি রাফায়েল আছে ভারতের, একেকটির দাম কত?

১৫

ফের গোলাগুলি শুরু, উত্তেজনা তুঙ্গে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে

১৬

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে নাক গলাতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র

১৭

দুপুরের মধ্যেই আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবি ড. মাসুদের

১৮

সকালেও বিক্ষোভ চলছে যমুনার সামনে

১৯

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা

২০
X