আরিফ, রিফাত ও আসমা জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। যশোরের মনিরামপুর দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সেই টাকা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন খাতে না দিয়ে বিদ্যালয় উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুদান পেতে দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর অভিভাবক জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পিবিজিএসআই কর্তৃক ৫ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয় দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। গত ১৯ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পিবিজিএসআই/এসইডিপি/১৮/২০২১/২০৩ স্মারক পত্রে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী/বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ৫০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে দশম শ্রেণির আরিফুল ইসলাম, সপ্তম শ্রেণির রিফাত হোসেন ও আসমা খাতুনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে অনুদানের সমুদয় টাকা উত্তোলন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বরাদ্দের অংশ দেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী কার্ড থাকায় অনুদানের টাকা না দিয়ে ব্যয় করা হয়েছে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে। অন্যদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, কার্ড থাকলেও অনুদান পাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, প্রতিবন্ধী আরিফ ও রিফাতের অভিভাবকরা অনুদানের টাকা পেতে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন রায়ের কাছে ধরনা দিয়েছেন। উপায়ান্তর না পেয়ে অভিভাবক আসাদুল ও লাভলু রহমান গত ১৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মনিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রোববার (৩ ডিসেম্বর) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এই ঘটনার শুনানি হয়। শুনানিতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অনুদান সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন রায়ের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনিচুর রহমান তজু ও শিক্ষক প্রতিনিধি প্রভাষ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী কার্ড থাকার কারণে অনুদানের টাকা স্কুলের উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হয়েছে।
অবশ্য, এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার মুঠোফোনে জানান, শুনানি শেষে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় দেওয়া হয়েছে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
মন্তব্য করুন