কাশ্মীর ইস্যুকে ঘিরে হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যেই এবার ভারতের তিনটি বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানের হামলার স্বীকারোক্তি দিল দিল্লি। তবে পরিস্থিতিকে আরও জটিল না করে শান্ত রাখার বার্তা দিয়েছে ভারত।
স্থানীয় সময় শনিবার (১০ মে) এক জরুরি সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারত জানায়, পাকিস্তান উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তাদের উধমপুর, পাঠানকোট ও বাথিন্ডা বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।
এর আগে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আয়োজিত ওই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি, সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা বলেন, আমরা উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চাই না। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করে, ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ পরিচালনার মাধ্যমে তারা ভারতের তিনটি বিমানঘাঁটি ও একটি সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের দাবি, পাঞ্জাবের অমৃতসরের বিয়াসে অবস্থিত ভারতের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের মজুতাগার পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।
‘ব্রহ্মস’ হলো ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্ভাবিত একটি সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা সর্বোচ্চ ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি জাহাজ, সাবমেরিন, যুদ্ধবিমান ও স্থলভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য।
ভারতের পাল্টা অভিযান শুরু হয় শুক্রবার রাতেই। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ওই অভিযানে পাকিস্তানের তিনটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। রাওয়ালপিন্ডির নূর খান ঘাঁটি, সরকোটের রফিকি ঘাঁটি এবং চকওয়ালের মোরাইদ ঘাঁটি ছিল লক্ষ্যবস্তু।
পাকিস্তান দাবি করেছে, রাওয়ালপিন্ডির গুরুত্বপূর্ণ নূর খান ঘাঁটিতে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদজুড়ে বিস্ফোরণের তীব্র শব্দ শোনা গেছে। এরপরই পাকিস্তান চালায় তাদের পাল্টা আক্রমণ।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই সামরিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে শঙ্কায় ফেলেছে। আন্তর্জাতিক মহল এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
দিল্লির ভাষ্যমতে, তারা এ মুহূর্তে যুদ্ধ নয়, বরং কূটনৈতিক ও কৌশলগতভাবে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তবে, পাল্টাপাল্টি অভিযানের এই ধারা থামানো না গেলে তা দুই দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রার সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।
মন্তব্য করুন