রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কামালপুর হানাদারমুক্ত দিবস আজ

কামালপুরে স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : কালবেলা
কামালপুরে স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : কালবেলা

জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কামালপুর রণাঙ্গন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৬২ জন সদস্য অস্ত্রসহ আনুষ্ঠানিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসর্মপণ করেন। কামালপুর মুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে সূচিত হয় জামালপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল তথা ঢাকা মুক্ত হওয়ার পথ।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর রণাঙ্গন। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে থাকা ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর রাজধানী ঢাকা দখলের সহজ ও একমাত্র পথ ছিল এটি।

এদিকে ঢাকা দখলের উদ্দেশে হানাদার বাহিনী ধানুয়া কামালপুরে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল। এই শক্তিশালী ঘাঁটির পতন ঘটানোর লক্ষ্যে কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃতে ১২ জুন থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের দফায় দফায় সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় ৩১ জুলাই রাতে। সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিনসহ ১৯৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও শত্রু পক্ষের একজন মেজরসহ ৪৯৭ জন নিহত হয়। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের একটি মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গুরুতর আহত হন এবং একটি পা হারান। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী হানাদার বাহিনীর কামালপুর বিওপিতে আঘাত হানে। মাত্রাতিরিক্ত আর্টিলারি গোলা বর্ষণ করেও তেমন কোনো ক্ষতি করা সম্ভব হয়নি।

এরপর বিমান হামলার মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিওপি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত হয়। শুরু হয় বিমান আক্রমণ। প্রতিটি মিশনের পর মেজর জেনারেল গিল পাক বিওপি কমান্ডার ক্যাপ্টেন আহসানকে আত্মসমর্পণ করার জন্য একটি করে চিঠি পাঠান। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ৪ ডিসেম্বর শত্রু সেনা বিওপিতে প্রথম চিঠি নিয়ে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বশীর আহমদ বীর প্রতীক। চিঠিতে লেখা ছিল ‘তোমাদের চারদিকে যৌথ বাহিনী ঘেরাও করে রেখেছে। বাচঁতে চাইলে আত্মসর্মপণ কর। তা না হলে মৃত্যু অবধারিত’।

এই চিঠি পেয়েও অগ্নিমূর্তি ধারণ করে পাকসেনা কমান্ডার আহসান মালিক। বশিরের ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় আরেকটি চিঠি দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সঞ্জুকে পাঠানো হয় পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে। চিঠির জবাব না পাওয়ায় শুরু হয় চূড়ান্ত বিমান হামলা। অবস্থা বেগতিক দেখে অস্ত্রসহ পাকিস্তানি বাহিনীর কামালপুর ক্যাম্পের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিকসহ ১৬২ জনের একটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এতে হানাদারমুক্ত হয় কামালপুর রণাঙ্গন।

এরপর কামালপুর মাঠে প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর থেকেই ৪ ডিসেম্বর ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৭ ঘণ্টা পর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় সংঘর্ষ, আহত অনেক

ক্যাম্প ন্যুতে বার্সার রাজকীয় প্রত্যাবর্তন

জনগণকে নিয়ে এলাকার কল্যাণে কাজ করব : রবিন 

দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ৭৬ ক্লাবকে নিয়ে কোয়াবের চা-চক্রের আয়োজন

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে শুয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা

এবার নিজেদের মাঠে নাস্তানাবুদ লিভারপুল

ভূমিকম্পে নিহতদের সম্পর্কে যা বলেছেন নবীজি (সা.)

তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কোরআন বিতরণ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা, হল ত্যাগের নির্দেশ

১০

সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, ৬ শ্রমিক দগ্ধ

১১

বাংলাদেশ সমাজকর্ম শিক্ষক সমিতির আত্মপ্রকাশ 

১২

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও ইউনিভার্সেল মেডিকেলের স্বাস্থ্য চুক্তি

১৩

ভূমিকম্পে নিহত রাফিকে শেষ দেখা দেখলেন মুর্মূষু মা

১৪

নরসিংদীতে ফের ভূমিকম্প, বাড়ছে আতঙ্ক

১৫

বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানের বিকল্প নেই : দুলু

১৬

এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা, ৩২ ভবনে এখনো মানুষের বাস

১৭

মেট্রোরেল লাইনের ওপর পড়ল ড্রোন, অতঃপর...

১৮

জাতীয় নার্স কমিশন হতেই হবে : ফরহাদ মজহার

১৯

রাজধানীতে চলন্ত বাসে আগুন

২০
X