শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কামালপুর হানাদারমুক্ত দিবস আজ

কামালপুরে স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : কালবেলা
কামালপুরে স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : কালবেলা

জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কামালপুর রণাঙ্গন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৬২ জন সদস্য অস্ত্রসহ আনুষ্ঠানিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসর্মপণ করেন। কামালপুর মুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে সূচিত হয় জামালপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল তথা ঢাকা মুক্ত হওয়ার পথ।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর রণাঙ্গন। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে থাকা ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর রাজধানী ঢাকা দখলের সহজ ও একমাত্র পথ ছিল এটি।

এদিকে ঢাকা দখলের উদ্দেশে হানাদার বাহিনী ধানুয়া কামালপুরে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল। এই শক্তিশালী ঘাঁটির পতন ঘটানোর লক্ষ্যে কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃতে ১২ জুন থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের দফায় দফায় সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় ৩১ জুলাই রাতে। সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিনসহ ১৯৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও শত্রু পক্ষের একজন মেজরসহ ৪৯৭ জন নিহত হয়। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের একটি মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গুরুতর আহত হন এবং একটি পা হারান। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী হানাদার বাহিনীর কামালপুর বিওপিতে আঘাত হানে। মাত্রাতিরিক্ত আর্টিলারি গোলা বর্ষণ করেও তেমন কোনো ক্ষতি করা সম্ভব হয়নি।

এরপর বিমান হামলার মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিওপি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত হয়। শুরু হয় বিমান আক্রমণ। প্রতিটি মিশনের পর মেজর জেনারেল গিল পাক বিওপি কমান্ডার ক্যাপ্টেন আহসানকে আত্মসমর্পণ করার জন্য একটি করে চিঠি পাঠান। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ৪ ডিসেম্বর শত্রু সেনা বিওপিতে প্রথম চিঠি নিয়ে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বশীর আহমদ বীর প্রতীক। চিঠিতে লেখা ছিল ‘তোমাদের চারদিকে যৌথ বাহিনী ঘেরাও করে রেখেছে। বাচঁতে চাইলে আত্মসর্মপণ কর। তা না হলে মৃত্যু অবধারিত’।

এই চিঠি পেয়েও অগ্নিমূর্তি ধারণ করে পাকসেনা কমান্ডার আহসান মালিক। বশিরের ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় আরেকটি চিঠি দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সঞ্জুকে পাঠানো হয় পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে। চিঠির জবাব না পাওয়ায় শুরু হয় চূড়ান্ত বিমান হামলা। অবস্থা বেগতিক দেখে অস্ত্রসহ পাকিস্তানি বাহিনীর কামালপুর ক্যাম্পের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিকসহ ১৬২ জনের একটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এতে হানাদারমুক্ত হয় কামালপুর রণাঙ্গন।

এরপর কামালপুর মাঠে প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর থেকেই ৪ ডিসেম্বর ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না, যদি…

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক শুরু, যুদ্ধ বন্ধের প্রত্যাশা

‘সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রাখতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ’

বগুড়া মিডিয়া অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটি ঢাকার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

সাদা পাথর লুটের ঘটনায় ১৫০০ জনের নামে মামলা

‘জামায়াত এখন মধু খাচ্ছে তাই নির্বাচন চায় না’

মহাসড়ক যেন মৃত্যুকূপ, পিছু ছাড়ে না দুর্ঘটনা

সাড়ে ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি, খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র

চট্টগ্রাম-ঢাকায় পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু শনিবার

বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক : মোস্তাফিজুর রহমান

১০

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো ৯৮ বাংলাদেশিকে

১১

যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের হুমকিতে

১২

ডাকসুতে ছাত্রদলের যারা প্রার্থী হতে পারেন

১৩

মামলা প্রত্যাহারসহ দুই ওসির অপসারণ দাবি

১৪

‘স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে বাধায় রবীন্দ্রবিরোধী চক্র জড়িত’

১৫

দেশ অস্থিতিশীল করে তৃতীয় শক্তিকে আনতে চায় একটি চক্র : খায়রুল কবির খোকন

১৬

জামায়াতে ইসলামী সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করে : ডা. তাহের

১৭

৫০ হাজার টাকার জালনোটসহ চক্রের দুই সদস্য আটক

১৮

‘শেখ মুজিবের আদর্শ পালন মানে বাকশাল কায়েম’

১৯

হাওরে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ ৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার 

২০
X