কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ নাই। নানা কারণে গত স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ পার্লামেন্টের উপনির্বাচনগুলোর কারণে ভোটারদের সন্দেহ ভোটকেন্দ্রে এলে ভোট দিতে পারবে কি না। আমরা এই সন্দেহটা দূর করার চেষ্টা করছি।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা করিমগঞ্জ-তাড়াইলের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় নির্বাচনী পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ভোটারদের ভোট না দিতে পারার সন্দেহ পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে আমার যেহেতু এলাকার সব মানুষ পরিচিত তাই তাদের বলেছি আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসবেন। নির্বাচন কমিশন ও সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবারের নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন, ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করছি, আশা করা যায় ভোটারের উপস্থিতি ভালো হবে।
নিজ আসনের নির্বাচন নিয়ে প্রচার প্রচারণা সর্ম্পকে চুন্নু বলেন, এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত হিংসাত্মক কোনো কিছু ঘটেনি এবং হবে বলে মনে করি না। তবে একটা বিষয় যেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে আমার এখানে একজন প্রার্থী আছেন যিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন (স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর অব. নাসিমুল হক)। তার স্ত্রী বিভিন্ন মিটিংয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে পরিচয় দিচ্ছেন আমি প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়। তিনি পরিচয় দেন প্রধানমন্ত্রীর বোনের মেয়ে। এই পরিচয়ের কারণে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলছেন প্রধানমন্ত্রী তাকে পাঠিয়েছেন। আমি জানি না প্রধানমন্ত্রী যদি তার আত্মীয় হতেন তাহলে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেননি কেন। আমি বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সরকারি চিফ এক্সিকিউটিভ তার কোনো আত্মীয় যদি প্রকাশ্যে এভাবে মিটিংয়ে গিয়ে বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় তাহলে সেখানে নিরপেক্ষ ভোট হবে না। আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই আপনার যে আত্মীয় পরিচয় দেয় তাকে জরুরি নির্দেশ দেন এরকমভাবে যেন আপনার পরিচয় দিয়ে ভোটারদের ভয় না দেখায়। আওয়ামী লীগ কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। তিনি বলছেন প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে (নাসিমুল হক) ভোট দিতে হবে। এই কথাগুলো কিন্তু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাঘাত ঘটছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্স দিয়ে যখন বলে, তার খালা হয় তাকে পাঠিয়েছে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি জানি প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই বিষয়টি জানেন না, ওনাকে বিক্রি করছে। কাজই রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্র আছে তাদের যেন নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রকাশ্যে যেসব কথা বলছে তা যেন বন্ধ করেন। তা না হলে বিষয়টি আমি চিন্তা কর কী করা যায়।
জাতীয় পার্টির অবস্থান তুলে ধরে মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, সারা দেশে জাতীয় পার্টি অনেক জায়গায় খুবই বিরূপ অবস্থায় আছে। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। আমি এখান থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমাদের চেয়ারম্যান গোলাম কাদের উনি রংপুরে আছেন। তিনিও চেষ্টা করছেন। তবে হিংসাত্মক বড় কোন ঘটনা এখনও ঘটেনি। আমরা চাই জাতীয় পার্টি যেন নির্বিঘ্নে প্রচার প্রচারণার কাজটি করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর পরিচয়ে ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে কি না জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাসিমুল হকের সাথে এই রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত একাধিকবার মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে মো. মুজিবুল হক (জাতীয় পার্টি), ওমর ফারুক (ইসলামী ঐক্যজোট), মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (এনপিপি), মোহাম্মদ মাহফুজুল হক (স্বতন্ত্র) মো. গোলাম কবির ভূঞা (স্বতন্ত্র), মো. নাসিমুল হক (স্বতন্ত্র), মো. রুবেল মিয়া (স্বতন্ত্র)।
মন্তব্য করুন