শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার আসামি দাউদ খানকে (৫৫) রাতের আঁধারে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের মেছের আলী মুন্সি কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোজাম্মেল মাদবরকে (৪২) আটক করে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
নিহত দাউদ খান মেছের মুন্সী কান্দি গ্রামের মৃত ইসমাইল খানের ছেলে। আটক মোজাম্মেল মাদবর (৪০) একই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মাদবরের ছেলে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, আগে থেকেই দাউদ খানের সাথে মোজাম্মেল মাদবরদের জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মাদবরকে হত্যা করা হয়। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন দাউদ খান।
বিষয়টি নিয়ে দাউদ খান এর মেয়ে নিঝুম কালবেলাকে জানান, গত ৭ জানুয়ারি আমার বাবাকে মোজাম্মেল মাদবর মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় গত রাতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায় তারা। আমার বাবাকে এমনভাবে মারা হয়েছে আমি তার চেহারা পর্যন্ত দেখতে পারিনি। আমি এর কঠিন বিচার চাই।
দাউদ খানের বোনজামাই ফারুক গোমস্তা জানান, গতকাল রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন দাউদ খান। বাড়ির সামনে আসলে তাকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় তার মাথায়, মুখে, পিঠে, ও পায়ে উপর্যুপরি কোপায় তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ সেখানে ফেলে রেখে চলে যায়।
স্থানীয় ঠান্ডু চোকদার জানান, গতকাল সন্ধ্যায় দাউদ খান শিকদার মার্কেট বাজারে এসে আমাদের জানায়, মোজাম্মেল মাদবর আর জুলফিকার আলি মেম্বাররা তার জমি দখল করেছে এবং তাকে খুন করার হুমকি দিয়েছে। আমরা তখন তাকে থানা পুলিশের কাছে যেতে বলি। আজকে সকালেই শুনি দাউদ খানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন ঢালী কালবেলাকে বলেন, রাতের আঁধারে কে বা কারা এমন জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা কিছুই জানতে পারিনি। সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ শরিফুল আলম জানান, আমরা সকালে খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। পাশাপাশি স্থানীয়দের হাত থেকে মোজাম্মেল মাদবরকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে থানা হেফাজতে নেই। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন