কুড়িগ্রামের কচাকাটা এলাকা থেকে তিনটি তক্ষক উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ সময় তক্ষক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে তক্ষক কেনাবেচার গোপন সংবাদ পেয়ে কচাকাটা থানার দক্ষিণ বলদিয়া পালপাড়া গ্রামের পনির উদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে এসব তক্ষক উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, উদ্ধারকৃত তক্ষক বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরের কুড়িগ্রামের ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় পুলিশ সুপার জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মহা বিপন্ন প্রাণী তক্ষক বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত। চক্র তক্ষকের কোটি কোটি দাম দেখিয়ে বৃত্তবানদের প্রতারিত করে আসছে। আমরা এসব সিন্ডিকেটের সদস্যদের উপর নজর রাখছি। যে কোনো ধরনের বন্যপ্রাণী পাচার, কেনাবেচা বন্ধ ও প্রতারণার মূলৎপাটনে জেলা পুলিশ কাজ করছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কচাকাটা থানার পূর্ব বিষ্ণপুর এলাকার মোজাম্মেল হক মজনু, আবুল কাশেম, রিয়াজুল ইসলাম লেবু, নয়ানা গ্রামের মোর্শেদ আলম ও বড় ছড়ার পাড় গ্রামের শাহ আলম।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, তক্ষক (Gecko) গিরগিটি প্রজাতির নির্বিষ নিরীহ বন্যপ্রাণী। সাধারণত পুনোনো বাড়ির ইটের দেয়াল, ফাঁক-ফোকর ও বয়স্ক গাছে এরা বাস করে। কীটপতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপের বাচ্চা খায়। আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকা অনুযায়ী এটি বিপন্ন বন্যপ্রাণী।
তিনি বলেন, তক্ষকের দাম ও তক্ষক দিয়ে তৈরি ওষুধ নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আর গুজবে বিশ্বাস করে এক শ্রেণির লোকেরা রাতারাতি ধনী হবার স্বপ্নে তক্ষক শিকারে নেমেছে। মূলত ব্যাপক নিধনই তক্ষক বিলুপ্তির প্রধান কারণ। এ ছাড়া তক্ষক দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ওষুধের উপকারিতা নিয়ে যা শোনা যায়, বৈজ্ঞানিকভাবে তার কোনো ভিত্তি নেই। তারপরও এই গুজবটির কারণেই প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে।
মন্তব্য করুন