দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্রামবাসীর ওপর মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ফের তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাদের দফায় দফায় হামলায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেন গ্রামের লোকজন। ওই নির্বাচনে মোশাররফ হোসেন মোশা ও তার বাহিনীর লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূইয়ার পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে ১ লাখ ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে হেরে যান শাহজাহান। আ.লীগ প্রার্থীর বিপুল ভোটে বিজীয় হওয়ার পর থেকেই মোশাররফ হোসেন মোশা বাহিনীর সদস্যরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা গ্রামবাসীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
সোমবার দুপুরে নাওড়া এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ৪৩ মামলার পলাতক আসামি মোশাররফ হোসেন ওরফে মোশাসহ মোশা বাহিনীর সদস্য নিরব, স্বাধীন, সাখাওয়াত উল্লাহ, আব্বাস, নাজমুল, রুবেল, আনোয়ার, জয়নাল, তাজেল, রিফাত, রায়হান, আলহাদি, জাগু, বুটটু, চোরা দুলাল, আব্দুল, আরমানসহ প্রায় একশ থেকে দেড়শ সদস্য দেশি অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা চালায়।
এ সময় গ্রামের নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বৃদ্ধরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মোশা বাহিনী গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়িভাবে গুলি ছুড়তে শুরু করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হামলায় আলতাব হোসেন নামের এক নিরীহ গ্রামবাসীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কে সৃষ্টি করে। গ্রামবাসী নিজেদের আত্মরক্ষা করতে মোশা বাহিনীর ওপর পাল্টা হামলা চালায়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া।
খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপঙ্কর চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করেও মোশা বাহিনী ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। মোশা বাহিনীর হামলায় রিপন, মাতিন, কামাল, সজিব, হানিফ, শাকিল, আরিফুলসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপঙ্কর চন্দ্র সাহা বলেন, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মন্তব্য করুন