মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ এখনো চলছে। তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) । এদের মধ্যে আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তাদের অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। নিরাপত্তার স্বার্থে চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাহারা দিচ্ছে বিজিবির সদস্যরা।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে আসেন।
আহতরা হলেন- ইউ পিও (৪৮), কিয়া থান সিন (২৯), কিন মং (২০) ও লা নি মং (৩০)। তারা চারজনই বিজিপির সদস্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে (ওএসইসি) কর্মরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মোমিন উল্লাহ ভূঁইয়া। কালবেলাকে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের চারজন গুলিবিদ্ধ সদস্যকে হাসপাতালে রাত পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। চারজনই গুলিবিদ্ধ।
রাত সোয়া ১২টায় হাসপাতালে বিজিপির সদস্যদের চিকিৎসার খবর নিতে আসেন বিজিবি চট্টগ্রাম-৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী। তিনি কালবেলাকে বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান সীমান্তবর্তী পরিস্থিতির কারণে বেশকিছু মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি) কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সংঘর্ষের কারণে তাদের বেশকিছু আহত বিজিপি সদস্যও আমাদের বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে পাওয়া যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং একান্ত মানবিক কারণে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার হাসপাতালের পরামর্শে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহত বিজিপি সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে চিকিৎসাকালীন সময়ে তারা বিজিবির পাহারায় থাকবে।
এদিকে মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সংখ্যা বাড়ছেই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তিন দিনে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মোট ২২৯ জন বিজিবির হেফাজতে এসেছেন। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-এর সশস্ত্র সদস্য যেমন আছেন, তেমনি ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যও রয়েছেন।
মন্তব্য করুন