মনজু বিজয় চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে চা বাগানে, গাছে গাছে নতুন কুঁড়ি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চা বাগান। ছবি : কালবেলা
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চা বাগান। ছবি : কালবেলা

সম্প্রতি বৃষ্টিতে ভিজেছে চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। যা চা উৎপাদনে সুফল বয়ে এনেছে।

বৃষ্টির প্রভাবে প্রাকৃতিক রুক্ষতা দূর হয়ে গাছ-গাছালিতে কিছুটা সবুজ প্রাণ ফিরে এসেছে, বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানগুলোতে।

চা বাগানের হিসাব অনুযায়ী, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরে একবার করে চা-গাছে প্রুনিং করা হয়। একে বলে ছাঁটাই করা। ডিসেম্বরের পর থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রতি বছর সেকশনে (চা বাগানের সুনির্দিষ্ট এলাকা) প্রুনিং হয়ে থাকে তা নয়। পর্যায়ক্রমে গড়ে দুই-তিন বছর পর পর চলে প্রতি সেকশনে এই ছাঁটাই কার্যক্রম। তখন চা বাগানগুলোর অন্য এক রূপ ধরা পড়ে। সবুজ সতেজ পাতাগুলো বিলীন হয়ে তখন শুধু মড়া ডালের উপস্থিতি দেখা যায়।

সময় গড়ায়। চা-বাগান থেকে ধীরে ধীরে শীত বিদায় নেন। চলে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। তবে শীতের আমেজ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায় না। সকালে এবং সন্ধ্যার আঁধারে নামে শীতের উপস্থিতি। এর মাঝেই প্রুনিং করা চা-গাছেরা যেন বৃষ্টির প্রহর গুণতে থাকে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, উপজেলায় প্রথম বৃষ্টির পর প্রুনিং করা চা গাছগুলোয় উঁকি দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। ছাঁটাই করা গাছগুলোয় কিছুটা সজীবতাও ফিরেছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শ্রীমঙ্গলে সম্প্রতি সিলেট বিভাগের মাঝে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান জানান, গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৩ মিলিমিটার।

চা বাগানের মালিকরা জানান, খরার পর এই বৃষ্টি যেন ‘আশীর্বাদ’ হিসেবেই এসেছে। বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য অনেক উপকারী। উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিবছরের শুরুতেই বাগানগুলোতে চা গাছের ডাল ছাঁটাই করা হয়। এতে উৎপাদন ও গুণগতমান ভালো হয়। এবার প্রুনিংয়ের পর মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে চা গাছগুলোতে নতুন পাতা ছাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টি মাখা মেখে সমৃদ্ধির সূচনা শুরু করে দিয়েছে চা-গাছেরা।

বাংলাদেশীয় চা সংসদের (বিসিএস) সিলেট শাখার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, বিশেষত ইয়াং টি বা নতুন চা গাছ, যেগুলোর জন্য বেশি প্রয়োজন। বৃষ্টির ফলে প্রুনিং করা চা গাছগুলো কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টির জন্য সঠিক সময়ে চা গাছের কুঁড়ি চলে আসবে। তাড়াতাড়ি চা পাতা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে যাওয়া সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, খরার কারণে চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন চা বাগানের ইরিগেশন (সেচ) দিয়ে চা গাছগুলোকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছিলেন না। সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টি চা শিল্পের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছগুলো ধীরে ধীরে তার আপন সজিবতা ফিরে পাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাহবাগ অবরোধ ৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের

গাজায় বাস্তবে এখনো যুদ্ধবিরতি হয়নি : কাতারের প্রধানমন্ত্রী

আগারগাঁওয়ে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ

রাজনীতিতে অবৈধ আয়ের প্রভাব চাঁদাবাজিকে উৎসাহিত করে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

যে কারণে বহিষ্কার হলেন জামায়াত নেতা নুরুল্লাহ

ধর্মের নামে দেশে বিভাজনের চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল

কাজি পদে আবেদন করতে পারবেন কওমি সনদধারীরা

চুম্বন দৃশ্য নিয়ে মুখ খুললেন ঐশী

হামজাকে দলে ভেড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে বার্সেলোনা

প্রাণ গেল স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার

১০

পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ / ২ লাখ ২৪ হাজার প্রবাসীর নিবন্ধন সম্পন্ন

১১

সারজিসকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার পর দুঃখ প্রকাশ

১২

সকালে হাঁটতে বেরিয়ে প্রাণ গেল স্কুলশিক্ষকের

১৩

তিন দাবিতে মোবাইল ব্যবসায়ীদের বিটিআরসি ভবন ঘেরাও

১৪

রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে এসে সড়কে পড়ে যান তানভীর, অতঃপর...

১৫

ঘরে মিলল স্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধার গলা কাটা মরদেহ

১৬

আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই অভ্যুত্থানে নিহতদের মরদেহ উত্তোলন : সিআইডি প্রধান

১৭

এবার দক্ষিণ কোরিয়াকে হারাল বাংলাদেশ

১৮

কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১৯

সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করছে: শফিকুল আলম

২০
X