এবার আলুর দাম ভালো থাকায় অনেক দিন পর ঈদের বাজার করতে এসে আর্থিক খুব একটা কষ্ট হয়নি আলু চাষিদের। আলু বিক্রি করে ঈদের বাজার করার জন্য ছেলেমেয়েকে নিয়ে অনেকেই কেনাকাটা করতে বাজারে এসেছেন। এবারের ঈদে আলু চাষিদের পরিবারে কিছুটা হলেও ঈদ আনন্দে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। আগের বছরগুলোতে আলু চাষ করে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু চলতি আলু মৌসুমে আশাতীত দাম পাওয়ায় কৃষকরা বেশ খুশি।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) পূর্ববাজারে ছেলে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের বাজার করতে এসেছেন ক্ষেতলালের তারাকুল গ্রামের কৃষক পরিবারের গৃহবধু মঞ্জুয়ারা বেগম। তিনি জানান, গৃহস্থ (স্বামী) আলু বিক্রি করে টাকা দিয়েছে ঈদের বাজার করার জন্য। তার স্বামী বোরো ধানের জমিতে কাজ নিয়ে ব্যস্ত। এবার আলুর দাম ভালোই আছে। সাধ্যমতো কাপড়চোপড় কিনেছেন ছেলে মেয়ের পছন্দের।
সদর উপজেলার ধারকি গ্রামের মশিউর রহমান ও বানিয়াপাড়া গ্রামের ফিরোজ হোসেন জানান, এবার আলুর আশাতীত দাম পেয়ে কৃষকের ঈদে কেনা কাটা করতে তেমন অসুবিধা হয়নি। এবার প্রচুর আলু আবাদ হয়েছে জেলায়। দামও খুব ভালো।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আর কয়েক দিন মাত্র বাকি। ঈদের বাজার বেশ জমে উঠেছে জয়পুরহাটে। কাপড়, জুতাসহ ঈদসংশ্লিষ্ট পণ্যের দোকানে দোকানে উপচেপড়া ভিড়। নারী ও পুরুষরা মিলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করছেন। র্পূব বাজার কাপড়পট্টি, মাড়োয়ারি কাপড়পট্টি, নিউমার্কেট, বিগ বাজারে থ্রিপিস, প্যান্ট, শার্ট, পায়জামা, শাড়ি, লুঙ্গি, জুতাসহ ঈদের আনুষঙ্গিক জিনিস কিনছেন ক্রেতারা। শহরের দোকানগুলোতে বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েদের নতুন নতুন নকশার পোশাক শোভা পাচ্ছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আবার বান্ধবীরা দলবেঁধে পছন্দের পোশাক কিনছেন। আলিয়া কাট, নায়রা, সারারা-গারারা এবং ওয়ান পিস, থ্রিপিস বিক্রি হচ্ছে বেশি। আর হাতে নকশা করা বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। ছেলেদের জিন্সের প্যান্ট ও শার্টের কাটতি বেশ ভালো বলে জানালেন দোকানিরা। বেচাকেনায় তারাও বেশ খুশি। তবে ক্রেতাদের দাবি দাম একটু বেশি।
পূর্ববাজার কাপড়পট্টির বাবু গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী ইসমাইল হোসেন জানান, বিক্রি বেশ ভালো। এবারে গ্রাম থেকে আসা নারী পুরুষ ক্রেতা বেশ ভালো। সাধারণত শহরের চাকরিজীবীরা বেতন বোনাস পেলে মূলত বিক্রি বাড়ে। কিন্তু এবার রোজার প্রথম সপ্তাহের পর থেকে বিক্রি জমে উঠেছে। আলুর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক পরিবারের কাস্টমারও চোখে পড়ার মতো।
শহরের মাড়োয়ারি কাপড়পট্টির তনুশ্রী বস্ত্রালয়ের মালিক সুজন কুমার জানান, এবার বেচাকেনা বেশ ভালো। গ্রামের কৃষক পরিবারের ক্রেতা লক্ষণীয়। তারা জামদানি, টাঙ্গাইলের শাড়ি কিনছেন। আলুর ভালো দাম পাওয়ায় ঈদের বাজারে বিক্রির ভালো প্রভাব পড়েছে।
মন্তব্য করুন