ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

‘এখন আয় বাড়লেও ব্যয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছি না’

অটোরিকশা চালক বাদশা মিয়া। ছবি : কালবেলা
অটোরিকশা চালক বাদশা মিয়া। ছবি : কালবেলা

‘একসময় এখনকার সময়ের আয়ের অর্ধেক আয় করতাম, তাতেই ভালোমতো চলতো সংসার। আর এখন আয় দ্বিগুণ বেড়েছে, কিন্তু দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধগতির কারণে ঠিকমতো চলতে পারছি না। সংসারে ঘানি টানতে ধারকর্জ করতে হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। এখন আয় বাড়লেও সাংসারিক ব্যয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছি না।’

বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীর্ঘভূমি এলাকায় কালবেলার সঙ্গে আলাপচারিতায় এভাবেই দুঃখ করে এসব কথাগুলো বলেন অটোরিকশা চালক বাদশা মিয়া। তিনি ওই এলাকার মৃত মুঞ্জর আলীর ছেলে।

তিনি জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে ৫শ থেকে ৭শ টাকা উপার্জন করেন। ঘরে প্যারালাইজড বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে ৫ সদস্যের পরিবার তার। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে। সাংসারিক নানামুখী খরচের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনার খরচও গুনতে হচ্ছে তাকে। সঙ্গে আছে অসুখ-বিসুখে ওষুধের খরচ। সব মিলিয়ে মাসিক উপার্জনের চেয়ে মাসিক ব্যয় বেশি হওয়ায় সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে তার।

তিনি বলেন, 'পুরোনো গাড়ি হওয়ায় মাসের মধ্যে কয়েকবার গাড়ির কাজ করাতে হয়। উপার্জনের কিছু অংশ গাড়ি মেরামতের কাজে ব্যবহৃত হয়। ব্যাটারির চার্জও সারাদিন যায় না, যে কারণে বিকেলের পরে আর গাড়ি চালাতে পারি না। আগের তুলনায় উপার্জন বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে তার চেয়ে বেশি। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচও দিন দিন বাড়ছে। পানি ছাড়া বলতে গেলে আর সবই কিনতে হয়। বাজার করতে গেলে দ্রব্যমূল্যের বাজারদরে দিশেহারা হয়ে উঠি। ইচ্ছে থাকলেও ভালোমন্দ খেতে পারি না। রোজায় দু-একদিন শখ কর খাওয়া ছাড়া বাহারি ইফতার আমাদের জন্য বিলাসিতা। রোজাও প্রায় শেষের দিকে, সামনে ঈদের অতিরিক্ত খরচের কথা মাথায় রেখে এখন পর্যন্ত একবেলা গরুর মাংসও খেতে পারিনি। ঈদে পরিবারের সদস্যদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে হবে এনিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এই চিত্র শুধু আমার নয়, আমার মতো আরও অনেক বাদশা মিয়ার।'

তিনি আরও বলেন, 'আয়-ব্যয় পেটের অজগর বোঝে না। কোনোরকমে রাত শেষে সকাল হলেই খুলে যায় খরচের খাতা। এনজিও থেকে কিস্তিতে নেওয়া টাকায় গাড়ি কেনার কারণে প্রতি সপ্তাহে গুনতে হচ্ছে কিস্তির টাকা। পুরুষ মানুষ হিসেবে নিজের পকেট খরচও আছে। সব মিলিয়ে সংসারের ঘানি টেনে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকদিন ধরে হার্নিয়ার যন্ত্রণা ভোগ করছি। ডাক্তার বলেছে অপারেশন লাগবে। অপারেশনের জন্য টাকা জোগাড়ও করতে পারছি না, তাই অপারেশনও হচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম সহজলভ্য হলে আমাদের মতো গরিবরা বেঁচে থাকতে পারব।'

ব্রাহ্মণপাড়ার সদর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক কালবেলাকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি নাগরিককে স্বনির্ভর করে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরইমধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রতিটি শ্রেণিপেশার মানুষের উপার্জন অনেকাংশে বেড়েছে। বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘আ.লীগের চূড়ান্ত দাফন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই যেন থেমে না যায়’

রাতে বৈঠক ডেকেছে বিএনপি

হাসিনার রায়ের পর ভারতকে বাংলাদেশের চিঠি, কী বলা হয়েছে?

বিশেষ অভিযানে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ২

শেখ হাসিনার প্রকাশ্য ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে : রাশেদ প্রধান

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে জয়পুরহাটে আনন্দ মিছিল

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে আবু সাঈদের বাবার প্রতিক্রিয়া

বনানীতে উদ্বোধন হলো সেভয়ের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ আউটলেট

জনগণকে যে আহ্বান জানাল অন্তর্বর্তী সরকার

মৃত্যুদণ্ডের রায়ে কষ্ট অনুভব করছেন আইনজীবী আমির হোসেন

১০

গ্রামীণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ

১১

ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ও উদ্ভাবনী অর্থনীতি : বাংলাদেশের পরবর্তী চালিকাশক্তি

১২

২১ নভেম্বর উপলক্ষে আইএসপিআরের বার্তা

১৩

২৩ মাস পর বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১৪

তালাকের পর দুধ দিয়ে গোসল করলেন জুয়েল

১৫

কান্নার শব্দ শুনে পরিত্যক্ত শৌচাগারে মিলল নবজাতক

১৬

মজলুমের দোয়া আজ কবুল হলো : শামারুহ মির্জা

১৭

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

১৮

পাশের দেশ অশান্তির উসকানি দিচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৯

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্ট্যাটাস

২০
X