সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৪, ০২:৩২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

পদ্মায় চলছে রেণু পোনা নিধনের মহোৎসব

পদ্মায় অবাধে চলছে রেণু পোনা নিধন। ছবি : কালবেলা
পদ্মায় অবাধে চলছে রেণু পোনা নিধন। ছবি : কালবেলা

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে এ মৌসুমে নতুন পানিতে মাছ বংশ বিস্তারের জন্য ডিম ও রেণু পোনা ছেড়ে থাকে। এ সুযোগে স্থানীয় কিছু অসাধু জেলে মৎস্য নিধনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। তারা পদ্মার পাড়জুড়ে পানির মধ্যে শত শত বাঁশ পুতে চায়না দুয়ারী, মশারি জাল, বেড়জাল, কারেন্ট জাল ও ডিম জালের ফাঁদে ফেলে মাছ নিধন চলছে।

সরেজমিনে পদ্মা পারের এলাকায় গিয়ে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা পদ্মা নদীতে জোয়ারের পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা পাড়ের এলাকাজুড়ে শত শত বাঁশ পুতে দুই বাঁশের সংযোগ জলমহলে ফেলে রাখা হচ্ছে বিশাল বিশাল আকৃতির চায়না দুয়ারী। প্রতিটি চায়না দুয়ারী ৫০/৬০ হাজার টাকা দরে কিনে এনে অসাধু জেলেরা এ কাজ করছে। দুয়ারীতে ছোট বড় মাছ, রেণু পোনা, এমনকি মাছের ডিমও আটকা পড়ছে। জেলেরা জানায়, প্রতিটি বেড়জাল ও ট্রলার তৈরি করতে ৮-১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সবকিকছুই মালিকের, আমরা শুধু লেবারের মতো মাছ ধরার কাজ করি। তাই প্রতিদিন ভোরে বিক্রিত মাছের শতকরা ৬০ ভাগ আমরা জেলেরা নিই এবং বাকি ৪০ ভাগ টাকা আড়ৎদারদের দিয়ে আসি।

পদ্মা নদীর দিয়ারা গোপালপুর মৌজা, চর কল্যানপুর মৌজা, চর কালকিনিপুর, চর তাহেরপুর, চর মির্জাপুর, চর শালেপুর, উত্তর শালেপুর, ভাটি শালেপুর, চর হাজীগঞ্জ মৌজা, চর মোহনমিয়া, মাঝিকান্দি, চরহরিরামপুর, চর ঝাউকান্দা, চর হোসেনপুর, জাকেরের সুরা মৌজা, টিলারচর মৌজা, মাথাভাঙ্গা ও চর মঈনট মৌজার বিশাল বিশাল জলমহলে দিন-রাত নিষিদ্ধ জাল দিয়ে চালানো হচ্ছে মাছ নিধনের এ মহোৎসব।

প্রতিদিন পদ্মা নদীর এসব এলাকা থেকে মাছ ধরে এনে জেলেরা উপজেলার চর মঈনট ঘাটের ২০টি আড়তে, চরহাজীগঞ্জ বাজারে চারটি আড়তে মৌলভীরচর বাজারে দুটি, আমিন খার হাটে তিনটি, মাসুদ খার হাটে দুটি ও আ. হাই খান হাটে দুটিসহ প্রায় ৩৫টি আড়তে সরবরাহ করেন।

চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সদরপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার এসএম জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমি পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার হিসেবে আছি। আমাকে চরভদ্রাসন উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার পর মাত্র একদিন আমি অফিসে গিয়েছি। আমি চরভদ্রাসন উপজেলার সব এলাকা চিনিও না। তবে খোঁজ খবর নিয়ে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনার ব্যাবস্থা নেব।

এ বিষয় ফরিদপুর জেলা মৎস্য অফিসার প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, নদীতে পানি আসতে শুরু করায় অবৈধ জালগুলোর ব্যবহার বাড়ছে। অবৈধ চায়না জাল বন্ধে বিভিন্ন প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া এর আগে মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, কিন্তু চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য অফিসার ট্রেনিংয়ে থাকার কারণে গত কয়েকমাসে অভিযান কম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে যেন নদীতে অবৈধ জাল ব্যবহার না করা হয়। এই জালে ছোট-বড় সব মাছই ধরা পড়ে। বিশেষ করে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বেশি আটকায় জালে। এটি জলজ উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু

রওনা দিয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, পাল্টা প্রস্তুতি ভেনেজুয়েলার

দেশে হবে আরও ৫১৬ কমিউনিটি ক্লিনিক

ফেসবুকে আমেরিকার বিরুদ্ধে কিছু বললেই পাবেন না ভিসা

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে হতাহত পরিবারের পাশে তারেক রহমান

আশুলিয়ায় বিপুল অবৈধ সিগারেটসহ আটক ২

স্কুলছাত্র রনি হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সরকারি অনুদানে নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রের মানোন্নয়নে সহযোগিতা করা হবে : মাহফুজ

শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালকের পদায়ন স্থগিতের দাবি

সিলেটে পাথর লুটে ১৩৭ নাম

১০

মির্জা ফখরুলের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য জানালেন ডা. জাহিদ

১১

ইতালিতে বাড়ছে অনিয়মিত অভিবাসী, শীর্ষে যে দেশ

১২

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন পৃথিবীর কেউ ঠেকাতে পারবে না : খোকন

১৩

ভারতে পালিয়ে থাকা আ.লীগ নেতাদের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ

১৪

আমলাতন্ত্র সংস্কারের উদ্যোগ স্তিমিত হয়ে গেছে : বিআইপি

১৫

চাকরি দিচ্ছে দারাজ, কাজ করতে পারবেন নিজ নিজ জেলায়

১৬

তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে : টুকু

১৭

‘জুলাই সনদ’ নিয়ে লিখিত মতামত দিল বিএনপি

১৮

‘সিলেটে পাথর লুটে জড়িতদের পুরো তালিকা প্রকাশ করবে প্রশাসন’

১৯

নির্ধারিত সময়ে হয়নি ওষুধের তালিকা হালনাগাদ ও মূল্য নির্ধারণ প্রতিবেদন

২০
X