মুন্সীগঞ্জে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমির প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়ে বিভিন্ন রাস্তাঘাট বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন মুন্সীগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন উপজেলাতে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌশলী মো. হাদিউজ্জামান।
রোববার (৫ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহর ও তার আশপাশে ব্যাপক আকারে ঝড় শুরু হয়। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী ঝড়ের সঙ্গে পড়তে শুরু করে শীল ও মুষলধারে বৃষ্টি। ব্যাপক ঝড়ের কারণে গভীর রাতে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন।
এদিকে ব্যাপক ঝড়ের কারণে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে কাজ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জ আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ আদালতে বিচার প্রার্থী আব্দুল হালিম বলেন, আমি মুন্সীগঞ্জ আদালতে আসছি একটি মামলা করার জন্য। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় মামলা টাইপ করতে পারছি না।
মালপাড়া বাসিন্দা গৌতম তালুকদার বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই একটি বৃষ্টির আভাস পাচ্ছিলাম। তবে এমন শিলাবৃষ্টি হবে তা কল্পনাও করিনি। বৃষ্টি থামার পর বাইরে বেরুলেই দেখতে পাই ছোট বড় বরফ খণ্ডের স্তূপ। এসব বফর সকাল পর্যন্ত গলতে দেখা গেছে।
অপর বাসিন্দা বাসুদেব বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চল চিতলিয়া এলাকায়। গত রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে আমার গ্রামের বাড়ির প্রায় প্রতিটি কাচের জানালা শিলাবৃষ্টিতে ভেঙে গেছে। এত বড় বড় আকারের বরফের টুকরো মনে হয় না এরূপ পূর্বে কখনো দেখেছি।
ব্যবসায়ী মঈনউদ্দিন সুমন বলেন, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বড়সর রান্নাবান্নার জন্য একটি সেট রয়েছে। গত রাতের শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ১৫০০ স্কয়ার ফিটের চালাটি ঝাজরা হয়ে গেছে। অনেক ক্ষতি হয়েছে আমাদের।
মুন্সীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন অলিতে গলিতে ঘুরে দেখা যায়, ঝড়ের কারণে গাছপালা পড়ে অনেক অলিগলি বন্ধ হয়ে রয়েছে। গাছের পাতা পরে ঢেকে রয়েছে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ওই সমস্ত স্থানগুলোতে ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কারের কাজ চলছে। ঝাড়ু দেওয়ার পরে স্থানে স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে আম গাছসহ অন্যান্য গাছের পাতা। শহর এলাকায় ব্যাপক ঝড়ের কারণে গাছে থাকা আম অর্ধেকের বেশি পড়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট আম গাছের মালিকরা জানিয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌশলী মো. হাদিউজ্জামান বলেন, বেশ কিছু গ্রাহক বিদ্যুৎ সরবরাহের বাইরে আছেন। আমাদের সহকর্মীরা ঝড় থামার পরে রাত হতেই মাঠে আছেন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। লাইনের ওপরে ব্যাপক পরিমাণ গাছপালা পরে থাকা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যাওয়াসহ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা পুনঃস্থাপনের জন্য কিছু সময় লেগে যাবে। এ কারণে সবার কাছে ধৈর্য ও সহযোগিতা কামনা করছি।
মন্তব্য করুন