রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে দুই আঞ্চলিক দলের মধ্যকার গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ শিশু রোমিও ত্রিপুরার (৭) মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৬ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে অপর হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি সাজেক ইউনিয়নের মালেংপাড়া ও গন্ডাছড়া এলাকায় দুই আঞ্চলিক দলের মধ্যকার গোলাগুলির ঘটনায় তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয় সে। এরপর থেকে টানা ৩ মাস যাবৎ চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছিল শিশুটি।
রোমিও ত্রিপুরার বাবা প্রবেন ত্রিপুরা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেলের চিকিৎসক শিশু রোমিওকে সোমবার রাত ১১টার দিকে পিআইসিইউতে রেফার করেন। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিআইসিইউতে কোনো সিট খালি ছিল না। তাই সেখানে থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ডেন্টাল হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক জানায় শিশুটির লাইফ সাপোর্ট লাগবে। কিন্তু ডেন্টাল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট না থাকায় সেখানে থেকে এশিয়ান হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই রোমিও মৃত্যু হয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোমিও ত্রিপুরার বাবা বলেন, আমার সন্তানের মতো যেন আর কারও সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু না হয়। পাহাড়ে এমন গোলাগুলি বন্ধেরও জোর দাবি করেন তিনি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার শিশু রোমিও ত্রিপুরার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি সাজেক ইউনিয়নের মালেংপাড়া ও গন্ডাছড়া এলাকায় দুই আঞ্চলিক দলের মধ্যকার গোলাগুলির ঘটনায় রোমিও ত্রিপুরা তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাজেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আর্থিক অনুদানে দীর্ঘ ৩ মাস চট্টগ্রাম মেডিকেলে ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের তত্ত্বাবধানে রোমিও ত্রিপুরার চিকিৎসা চলে।
মন্তব্য করুন