পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দেখতে শিশু মনে হলেও বয়স ১৭

১৭ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার। ছবি : কালবেলা
১৭ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার। ছবি : কালবেলা

বাড়ির আঙিনায় আপন মনে খেলাধুলা করছে দুই শিশু। প্রথম দেখায় যে কারো মনে হবে তারা চার অথবা পাঁচ বছরের শিশু। অথচ এদের মধ্যে একজনের বয়স ১৭ বছর।

তার নাম সুমাইয়া আক্তার। তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পবিত্রঝাড় ফরিঙ্গাপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন ও সুরতন বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট সন্তান। বয়সে ১৭ হলেও তার বাহ্যিক অবয়ব ৫ বছরের শিশুর মতো।

জানা গেছে, সুমাইয়ার জন্ম হয় ২০০৭ সালে। জন্মের পর পা বেঁকে যাওয়া ও নানা জটিলতায় অন্য ৮-১০টা শিশুর মতো শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হয়নি তার। এমনকি ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত ঠিকমতো কথাও বলতে পারেনি। অর্থাভাবে অসহায় বাবা-মা তার কোনো চিকিৎসা না করালেও বছরখানেক আগে সে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। কয়েক মাস চিকিৎসা করার পর সে কথা বলতে পারছে।

শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে সুমাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সে তার এক খেলার সাথীর সঙ্গে খেলা করছে। এ সময় তার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তার মুরগির মাংস খেতে ভালো লাগে। লম্বা চুলে বেনী করতে খোঁপা করতে তার ইচ্ছে করে। তার বাবা-মার টাকা না থাকায় তার চিকিৎসা হয়নি। এ জন্য সে বড় হয়নি। তবে তার বড় হতে খুব ইচ্ছে করে।

সুমাইয়ার বাবা জামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, বড় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। দুই ছেলের মধ্যে একজন মারা গেছে। সুমাইয়া যখন প্রতিবন্ধী হয় তখন তাকে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। সহায়সম্বল বলতে চার শতক বাড়ি ভিটে ছাড়া আর কিছু নেই। নিজেরাই ঠিকমতো চলতে পারি না। চিকিৎসা করাব কীভাবে। তার তো বিয়ে হবে না। বয়সে কিশোরী হলেও এখনো তাকে শিশুর মতো লালনপালন করতে হচ্ছে। আমরা মারা গেলে সুমাইয়ার কী গতি হবে, এ নিয়ে চিন্তিত আমরা।

সুমাইয়ার প্রতিবেশীরা জানান, দেড় বয়স থেকে তারা দেখছেন সুমাইয়া বেড়ে উঠছে না। ছোটবেলা থেকেই তার পা বাঁকা। প্রতিবন্ধীর যে সামান্য কিছু ভাতা পায় তা দিয়ে তারা চলতে পারে না। সুমাইয়ার পরিবার খুব অসহায় ও গরিব। চিকিৎসকরা মেয়েটির চিকিৎসার জন্য যে পরামর্শ দিয়েছিলেন সামর্থ্য না থাকায় তারা তা করাতে পারছে না। সুমাইয়ার বাবা-মা মারা গেলে তার কী হবে এ নিয়ে তারাও চিন্তিত। তাদের প্রত্যাশা এখনো যদি মেয়েটির উন্নত চিকিৎসা করা হয় হয়তো সে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে। তাই তারা তার চিকিৎসায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, কালবেলার প্রতিবেদকের মাধ্যমে সুমাইয়ার বিষয়টি জানতে পেলাম। সে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। প্রতিবন্ধী ভাতার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ থেকে তাকে সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা চেষ্টা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাছ চাষে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগে অধ্যাপক মামুনের সাফল্য

টাকার সঙ্গে ঘুষ নিলেন হাঁস

ইসলামের লেবাস পরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে একটি দল : ড. কাইয়ুম

চসিক কার্যালয় পরিদর্শনে চীনের উহু সিটির মেয়র

রুপাজয়ী খই খইয়ের স্বপ্ন এখন অলিম্পিক

বিতর্কিত মন্তব্য, ভারতকে হুঁশিয়ারি সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রীর

স্মৃতি মান্ধানার হবু বর পলাশ মুচ্ছালকে ঘিরে নতুন বিতর্ক

২৯ নভেম্বর মক ভোট : ইসি সচিব

মেট্রোরেলের ভাড়া কার্ডে প্রথম দিনই অনলাইন রিচার্জে বাধা 

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে রিটকারীর পেছনে ‘ভোমা বিড়াল’ : অ্যাটর্নি জেনারেল

১০

ইএমই কোরের সদস্যদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

১১

রাস্তার পাশে পড়ে ছিল ব্যবসায়ীর মরদেহ

১২

টি-টোয়েন্টিতে মালয়েশিয়ার অলরাউন্ডারের বিরল কীর্তি

১৩

নামের জটিলতা কাটিয়ে শুরু হচ্ছে খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ

১৪

একসঙ্গে জন্ম নেওয়া সেই পাঁচ শিশু হাসপাতালে ভর্তি

১৫

কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুন

১৬

ভূমিকম্পের সময় ছাত্রদের আগলে রাখা সেই মাদ্রাসাশিক্ষক পেলেন বিশেষ সম্মাননা

১৭

তপশিল ঘোষণার সময় জানালেন নির্বাচন কমিশনার

১৮

ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার পথে প্রোটিয়ারা

১৯

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জেটেবের ২ নেতা বহিষ্কার

২০
X