বাংলাদেশে এই প্রথম ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মেরিনা খাতুন। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেগমের সন্তান মেরিনা খাতুনকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
যুদ্ধশিশু মেরিনার কোথাও পিতার নাম লেখার প্রয়োজন হবে না। পিতার নাম ছাড়াই তিনি রাষ্ট্রের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
গত রোববার (৫ মে) জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ৮৯তম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে তাড়াশের বীরাঙ্গনা পচি বেওয়া (মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত) কন্যা মেরিনা খাতুন যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জামুকা ৮২তম সভায় মন্ত্রী বিষয়টি উথাপন করেন। সেখানে আলোচনা সভায় যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনা খাতুনকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় স্থানীয় রাজাকাররা তাড়াশের উত্তরপাড়ার মৃত ফাজিল আকন্দের বিধবা স্ত্রী পচি বেওয়াকে (বর্তমানে মৃত) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পাক বাহিনীর সামরিক ক্যাম্পে। তারপর সেখানে ওই নরপিশাচরা ওই বীরাঙ্গনার ওপর পাশবিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে নিমর্মভাবে নির্যাতন চালায়। আর পাক-হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের ফলে জন্ম হয় যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুনের।
পচি বেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান। যার গেজেট নম্বর-২০৫।
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মেরিনা খাতুন বলেন, আমাকে স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত সম্বলিত পত্র এখনো হাতে পাইনি। তবে আমাকে স্বীকৃতি প্রদানে আমি আনন্দিত। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের মতো যুদ্ধশিশুদের আর্থিকভাবে সম্মানী প্রদানের জন্য দাবি জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন