পিরোজপুরের কাউখালীতে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন স্থানীয় জনগণ।
জানা গেছে, উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পাঙ্গাশিয়া খালের ওপর প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ কার্যাদেশের পাঁচ বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৭ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজের টেন্ডার হয়। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে এক বছরের চুক্তিতে নির্মাণকাজটি শেষ করার কথা থাকলেও দফায় দফায় সময় বৃদ্ধি করে পাঁচ বছরেও কাজটি শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়রা জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি দিয়ে ৮ গ্রামে মানুষ যাতায়াত করে। এ ছাড়া ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ে জোলাগাতি মুসলিম আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জোলাগাতি ফাজিল মাদ্রাসা, জোলাগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খালের উত্তর পাড়ে শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস রয়েছে।
ফলে এসব অফিস এবং স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এ সেতু। অথচ বিকল্প কাঠের সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যে কোনো সময় ভেঙে খালে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। খালের দুই পাড়ের জনগণসহ হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি শিকার হচ্ছে।
খালের ওপর থাকা পূর্বের লোহার সেতুটি অপসারণ করে নতুন সেতু নির্মাণ করার জন্য পাইলিংয়ের কাজ শেষ করে ফেলে রাখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। যার ফলে স্থানীয় মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নুরুল আমিন মাঝে মাঝে সেতুর নির্মাণ কাজ করেন, আবার বন্ধও করে দেন। কবে এ সেতুর নির্মাণে কাজ শেষ হবে জানি না। যার ফলে এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
জোলাগাতি মুসলিম আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ঝুঁকি নিয়ে অস্থায়ী কাঠের সেতু পার হয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে।
শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ সেতুটি ইউনিয়নের অতি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। সেতুটি নির্মাণে বিলম্ব হওয়ার কারণে এলাকাবাসীর খুবই সমস্যা হচ্ছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. নুরুল আমিন বলেন, আমাদের কাজ চলমান। দ্রুত সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল কালবেলাকে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন