ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরগুনার তালতলীর উপকূলীয় এলাকা। এখনো পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছপালা, ভেসে গেছে গবাদিপশু ও ঘরের আসবাবপত্র।
অতীতের বড় বড় ঝড়-বন্যায় নিজেদের জানমাল রক্ষায় মানুষজন ব্যস্ত হয়ে পড়লেও এবারের ঝড় পরবর্তী চিত্র কিছুটা ভিন্ন। বন্যার পানি যখন সব ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখনো অসংখ্য মানুষকে জেনারেটরের দোকানে বন্ধ মোবাইল নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবল বন্যার কারণে তালতলী উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুই দিন ধরে বিদ্যুৎ বন্ধ পুরো এলাকায়। লোকজনকে মোবাইল ফোন ও টর্চ লাইট চার্জ করতে স্থানীয়ভাবে চালু করা কিছু জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। লম্বা লাইনে অপেক্ষমাণ থেকে ২০ থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে চার্জ করছেন তারা।
উপজেলার ৫নং বড়বগী ইউনিয়নে মালিপাড়া এলাকায় ঘুরে ঘুরে একই ব্যবসা করছেন মাসুম। তিনি বলেন, আমি দেখলাম টাকা নিলেও মানুষের উপকার হচ্ছে। তাই জেনারেটর ভাড়া করে সকলের চার্জের ব্যবস্থা করছি। আমি চার্জ প্রতি ৫০, ৩০ ও ২০ টাকা যার কাছ থেকে যা নেওয়া যায় নিচ্ছি। এতে এলাকার মানুষও খুশি।
মোবাইল চার্জ দিতে আসা ইমরান হোসেন বলেন, টাকা লাগছে এতে কোনো সমস্যা নেই। মোবাইল, টর্চ লাইট ও চার্জার লাইট চার্জ দিতে পেরেছি, এতেই আমরা খুশি। তা ছাড়া তাদেরও জেনারেটর খরচ আছে। তাদের কারণে আমাদের উপকার হচ্ছে।
তালতলী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব আর দমকা হাওয়ায় উপকূলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে গবাদিপশু। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছেন কয়েক হাজার পরিবার। এমন অবস্থায় উপকূলবাসী খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে খাবার সংকটের পাশাপাশি পানিবন্দি অবস্থায় আছে অনেক পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রমসহ জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, তালতলীর বিভিন্ন এলাকার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, পাশাপাশি এখনো ১০ হাজার ৩০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
মন্তব্য করুন