পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানিবন্দি ফতুল্লাবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজ অর্থায়নে ট্রান্সফরমার কিনে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
বুধবার (২৯ মে) বিকেলে ফতুল্লার লালপুরে পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, ফতুল্লার লালপুর এলাকার রাস্তা উঁচু এলাকা নিচু। তাই তিন লাখ মানুষ প্রায় পানিবন্দি হয়ে আছে। আমরা এখানে তিনটি পানির মোটর পাম্প বসিয়েছিলাম। এখানে একটি ট্রান্সফরমার ছিল, সেটা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না। এটার কারণে প্রচুর পানি জমে রাস্তা ও মসজিদ, মন্দিরে গিয়ে ডুকছে। পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ।
তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। এখন এখানে ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার লাগে। এটা ছিল এখানে, খুলে নেওয়া হলো কেন? এখান থেকে ৯০ লাখ টাকা বকেয়া বিল আছে। এগুলো পরিশোধ হয়নি, কে পরিশোধ করবে? ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না। আপাতত আমরা ট্রান্সফর্মার কিনছি। আমি নিজে ট্রান্সফর্মার কিনে দিব। আগামী কয়েকদিনে পানি নেমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে চাওয়া মানে একটা প্রসিডিউর আছে, এখানে সময় লাগবে। এখন যত টাকা দাম হোক আমি ঠিক করেছি সদকায়ে জারিয়া হিসেবে এই ট্রান্সফরমার কিনতে যত টাকা লাগে আমি দেব। এখানে অনেক ধনী লোক আছে। তারা এগিয়ে আসুক। এ এলাকায় বাড়ি দু’ফুট নিচে। কতদিন আমি এভাবে চলব। এলজিআরডিতে আমি স্পেশাল প্রজেক্ট দিয়েছি।
তিনি বলেন, এলজিআরডিতে আমরা প্রজেক্ট দিয়েছি। এলজিআরডি ব্যর্থ না। আমাদের এলজিআরডি মন্ত্রী চান এ কাজগুলো হোক। হয়তো নিচের লেভেল থেকে কাজগুলো সেখানে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে না। আমি আশা করি, এটার পার্মানেন্ট সমাধান করতে এলজিআরডির সহায়তা লাগবে। আমি এলজিআরডি মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যাক্তিগতভাবে কথা বলব। তিনি সুযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তারা এ কাজগুলো করে দিবেন বলে আমরা আশা করছি।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। ৯০ লাখ টাকা কে দিবে? তো আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বসব। এটা মওকুফ হলে হবে নয়তো আমরা ব্যবস্থা করব। কিন্তু এর পরের বিল কে দিবে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবদের বলব আগের থেকে ব্যবস্থা করবেন। এখন এখানে যত লোক আছে তারা সবাই একসঙ্গে বিল দিতে গেলেও সমস্যা। অনেকে আছেন সামর্থ্যবান, বিল দিতে পারেন। আবার অনেকে বিল দিতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, আপনারা সকলে যার যার এলাকার ড্রেন পরিষ্কার রাখবেন। আপনারা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন। আমি জানি, এটা আপনাদের পক্ষে একা সম্ভব না। যদি আর বৃষ্টি না হয় দুই দিনের মধ্যে এই পানি সরে যাবে। তোমরা ট্রান্সমিটারের খোঁজ নাও, আমি টাকা রেডি রেখেছি। ওটা লাগালে যত পানি আসুক টেনে বের করে দিতে পারব। এটার একটা পার্মানেন্ট সমাধান দরকার। আমি চাই এমনভাবে মানুষের কষ্ট তুলে ধরুন, সেটা আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালে ওটা আমার কথার চেয়ে বেশি কার্যকর হবে।
শামীম ওসমান বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের কাজ জুন, জুলাই মাসের মধ্যে শুরু হবে। একশ ২০ ফিটের রাস্তা হলে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। এই সরকার জনগণের সরকার। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দনশীল, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম শওকত আলী, মহানগর আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন