পরকীয়া প্রেমের জেরে ২০১৮ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কবিরাজ মফিজ হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নী এ আদেশ দেন।
মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বিউতা হিন্দুপাড়া গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার লাকী ওরফে হাসিনা (৩৭) ও একই এলাকার মো. আলাউদ্দিনের ছেলে মো. সালাউদ্দিন (৩৯)। আসামিরা দুজন সম্পর্কে দেবর ও ভাবি। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আসামিদের মৃত্যু কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
তবে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাই আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অন্যদিকে মামলার অপর আসামি নজরুল ইসলাম মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের বিউতা কবরস্থানের সামনের ডোবা থেকে কবিরাজ মফিজের হাত-পা-মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই এস এম মেহেদী হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, নিহত মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ কবিরাজ (৪০) ঢাকার সাভার থানার ভাকুর্তার কাইশ্যারচরের মতিউর রহমানের ছেলে। মামলার তদন্ত চলাকালে ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি গ্রেফতার হন আসামি মাকসুদা ও সালাউদ্দিন। পরে জামিন পেয়ে পলাতক হন তারা।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলা দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. নাজমুল হাসান। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, এটি একটি নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। একজন মানুষকে মেরে ১০ টুকরো করা- এটা কোনো সভ্য সমাজের মানুষের কাজ হতে পারে না। হত্যার পর আসামিরা সেই মরদেহ মাগুর মাছকে খাওয়ানোর জন্য একটি খামারে ফেলে দেয়। আদালতে ১৯ জন সাক্ষী সন্দেহাতীতভাবে আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মূলত ভিকটিমের খণ্ডিত মরদেহের সাথে তার ছেলের মিল পাওয়া যায়। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।
মন্তব্য করুন