প্রায় ২৩ বছর আগে ঢাকার কামরাঙ্গীচরে যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধূ ডালিয়া বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী টিটুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১০ আগস্ট) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় দেন। এ ছাড়া মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় টিটুর মা আমেনা বেগম ও তার ভাই শাহ আলমকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হারুনুর রশিদ জানান, মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে টিটুর মা আমেনা বেগম এবং তার ভাই শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
রায় ঘোষণার আগে টিটু আদালতে হাজির হন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ডালিয়া বেগমের সঙ্গে ১৯৯৭ সালে টিটু বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে টিটুসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে ডালিয়াকে নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের কারণে ডালিয়া আদালতে যৌতুকের মামলা করেন। পরে আপস করে মামলাটি প্রত্যাহার করে সংসার শুরু করেন তারা।
তবে টিটু এবং তার পরিবার আবার ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না দেওয়ায় ২০০২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সকালে টিটু ডালিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। টিটুর ভাই শাহ আলম, বোন জীবনী, ভাই মোস্তফা, মা আমেনা বেগম টিপুকে সহযোগিতা করেন। আগুনে ডালিয়া মারাত্মকভাবে জখম হয়ে জ্ঞান হারান।
আশপাশের ভাড়াটিয়ারা চিৎকার শুনে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় ডালিয়ার বাবা মো. রোস্তম আলী ২০০২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কামরাঙ্গীচর থানায় মামলা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান ডালিয়া। এদিকে মামলাটি তদন্ত করে ২০০৩ সালের ৬ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই জাফর আলী এ তিন আসামিসহ টিটু আরেক ভাই মোস্তফা এবং বোন জীবনীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১৩ মার্চ মোস্তফা এবং জীবনীকে অব্যাহতি দিয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন