বাচ্চার জন্য রাখা খাবার খেয়ে ফেলার জন্য প্রায়ই শিশু গৃহকর্মী হেনার ওপর নেমে আসত নির্মম নির্যাতন। গলায় পা দিয়ে চেপে ধরেও নির্যাতন করা হয়েছে হেনাকে। গৃহকর্ত্রীর এমন নির্যাতনে প্রাণ হারায় গৃহকর্মী হেনা। গৃহকর্মী হত্যার ঘটনায় কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ওই বাসার গৃহকর্মী সাথী আক্তার পারভীন ডলিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
থানা পুলিশ জানিয়েছে, হেনাকে হত্যার পর গ্রেপ্তার এড়াতে লাশ ও তার মোবাইল ফোন বাসায় রেখে পালিয়ে যায় ডলি। পালিয়ে যাওয়ার পর ডলি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। তবে এই সময়টুকুতে তিনি বিভিন্ন দোকান ও ব্যক্তির ফোন থেকে তার স্বজনদের কল করতেন।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। এর আগে যশোর থেকে ডলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তাকে ঢাকায় আনা হয়।
ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ বলেন, ডলি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে তাকে লাঠি আবার কখনো খুন্তি দিয়ে পিটিয়েছে। সেদিন মেয়েটি তার বাচ্চার জন্য খাবার খেয়ে ফেলায় সে মারধর করে। মেয়েটিকে নির্যাতনের ফলে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, এত নৃশংসভাবে তাকে মারধর করা হয়েছে যার চিহ্ন পাওয়া যায় তার বেডের মধ্যে। সেখানে মেয়েটির পায়খানা পাওয়া গেছে। তার নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়েটি বেডে পায়খানা করে ফেলে।
তিনি জানান, ডলি একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। তিনি একজন সার্ভেয়ার হিসেবে এলজিইডিতে কর্মরত ছিলেন। তার এক স্বামী ডাক্তার ছিল। আরেক স্বামী ছিল এলজিইডির গাড়িচালক। ডলি প্রথমে এলজিইডিতে কম্পিউটার টাইপিং পোস্টে জয়েন করেন৷ এরপর পড়াশোনা করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। গৃহকর্মী হেনাকে ডলি গত তিন বছর আগে বিসিকের একজন কর্মচারীর মাধ্যমে মুক্তাগাছা থেকে তার বাসায় এনেছিলেন।
তিনি আরও জানান, ডলি গ্রেপ্তার এড়াতে তার মোবাইল ফোন বাসায় রেখে পালিয়ে যান। তাকে যেন কোনোভাবে প্রযুক্তির আওতায় ধরা না যায়, তার জন্য তিনি পালানোর সময়টুকুতে বিভিন্ন ব্যক্তির নম্বর থেকে স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন।
মন্তব্য করুন