ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে আসার শুরুটা ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের সফলতার গল্প শুনে। চার বছর পর বর্তমানে নিজেই সফল ফ্রিল্যান্সার। মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফুয়াদ হাসান ফারাবী।
২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে থাকাকালীন হঠাৎ এক দিন ইউটিউবে একটি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত ভিডিও সামনে আসে ফুয়াদের। পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়া সফল ব্যক্তিদের ভিডিও দেখে তার এ পথে আসার আগ্রহ জন্মায়। এরপর তিনি ফ্রিল্যান্সিং ফিল্ড সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করেন পাশাপাশি এ কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ইউটিউবে ও বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল প্লাটফর্ম থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা শুরু করেন। পরবর্তীতে বন্ধুবান্ধবদের সহযোগিতায় ও এক বড় ভাইয়ের মেন্টরিংয়ে থেকে এ কাজগুলো শেখেন।
কাজ শেখার পর ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে তিনি প্রথম একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। এর চার মাস পর প্রথম একটি কাজ পান। প্রথম কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করে তিনি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ১২ ডলার টিপসসহ মোট ৭২ ডলার পান।
প্রথম কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করায় তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এরপর করোনাকালে অবসর সময় বেশি থাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় এ কাজে ব্যয় করতে থাকেন। এ কারণে তার আয়ের পাশাপাশি এ বিষয়ে দক্ষতাও বাড়তে থাকে।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অন্তর্ভুক্ত সরকারি তালিকাভুক্ত একজন ফ্রিল্যান্সার। সেই সাথে ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরির ডিজিটাল মার্কেটিং এ লেভেল ৪ অবস্থানে আছেন। তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি ইভেন্টেও আমন্ত্রণ পান।
ফাইভার মার্কেটপ্লেসে টপ রেটেড সেলার হওয়ার পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী অনেকেই তার কাছে শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর ২০২১ সাল থেকে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে তিনি অনলাইন প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে শেখানো শুরু করেন। পরবর্তীতে এর বাইরেও আরও দুটি প্রতিষ্ঠানে শেখানোর অফার পান।
পড়াশোনা গুছিয়ে রাখায় তার পড়াশোনায় তেমন সমস্যা হয় না। তিনি পরীক্ষার সময় তার শিক্ষার্থীদের দিয়ে কাজগুলো করিয়ে নেন।
নতুনদের জন্য তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্যারিয়ারটি পুরোপুরি শ্রম এবং সময়ের ওপর নির্ভরশীল। ধৈর্য ও আগ্রহের সঙ্গে নিয়মিত এ কাজে লেগে থাকতে হয়। এ কাজের জন্য মার্কেটপ্লেসের ওপর নির্ভর করে থাকতে হয় না। নিজে স্কিল ডেভেলপ করে নিজেই নিজের আয়ের উৎস বের করে ফেলা সম্ভব।
বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর কাজগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ভবিষ্যতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সব সেক্টর দখল করে ফেলতে পারে। তাই নতুনদের এ বিষয়ে জানতে হবে।
মন্তব্য করুন