খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কারাগারে অনশনরত খুবির দুই শিক্ষার্থীর অবস্থার অবনতি

খুবির দুই শিক্ষার্থী। ছবি : কালবেলা
খুবির দুই শিক্ষার্থী। ছবি : কালবেলা

মুক্তির দাবিতে খুলনা জেলা কারাগারে অনশনরত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। গত একসপ্তাহ ধরে কারা হাসপাতালে রেখেই স্যালাইনের মাধ্যমে তাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, বিগত সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির কারণে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

অনশনরত দুই শিক্ষার্থী হলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনীক ও পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মোজাহিদুল ইসলাম। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-উল মুজাহেদীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়।

খুলনা জেলা কারাগারের সুপার মো. নাসির উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, তারা দুজন আদালতের মাধ্যমে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর খুলনা জেলা কারাগারে আসেন। তাদের দুজনকে সোনাডাঙ্গা থানার বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

অপরদিকে সোনাডাঙ্গা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের দুজনের ১০ বছরের সাজা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনার খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এবং ময়মনসিংহ জেলায় তাদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা রয়েছে, যেগুলো আদালতে বিচারাধীন।

তিনি আরও বলেন, এ বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তারা একবার অনশন করেছিল। সেবার তাদের অনশনের স্থায়িত্ব ছিল তিনদিন। এবার তারা ১০ নভেম্বর থেকে অনশন শুরু করেছে। এখনো পর্যন্ত তাদের অনশন ভাঙেনি। তাদের অবস্থা অবনতি হওয়ায় কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্যালাইনের মাধ্যমে তাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই নুর মোহাম্মদের সঙ্গে পরিবারের কথা বলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অনশনের কারণ জানতে চাইলে কারা সুপার বলেন, সাজাপ্রাপ্ত ওই দুজন জানিয়েছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে দীর্ঘ ১৭ দিন বগুড়া ডিবি হেফাজতে নিয়ে গুম করে নির্যাতন করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিগত শেখ হাসিনা সরকারের দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে জনমত গড়ে তোলার কারণে এ প্রহসনের মামলার শিকার হয়েছেন। তারা এখন মুক্তি চান। মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।

কারাগারের এ কর্মকর্তা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও তারা কারাগারে এখনো আটক থাকায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং সাজাভোগ করছেন। তাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক কারাগার থেকে দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত কারাগারে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার অনশনের হুমকি দিয়ে সরকারি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।

তিনি বলেন, ওই সময়ে তাদের আগ্রহ অনুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে স্বাভাবিক করানো হয়। কারাগার থেকে এখনো মুক্তি না পাওয়ায় তারা একই দাবি তুলে ১০ নভেম্বর থেকে থেকে পুনরায় সরকারি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছেন।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী তাদের নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জনের মাধ্যমে তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নিয়মিত কাউন্সেলিং করা হচ্ছে এবং ১২ ও ১৩ নভেম্বর তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় তাদের আইনজীবী ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সরকারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খলিলুর রহমানকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা থেকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান রিজভীর

‘শিশুসুলভ আচরণের কারণে জুলাই হারিয়ে যেতে পারে না’

রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ছেন লুকা মড্রিচ

আসামি ধরতে গিয়ে হামলায় আহত পুলিশ ও আনসার সদস্য, মামলা দায়ের

সেভয়ের নতুন চমক ডিস্কোন আইসক্রিম 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ দুই উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

‘১৬ বছর আ.লীগ পিটাইছি, তোরও একই হাল করব’

কমলালেবুর আড়ালে সোয়া কোটি সিগারেট আমদানি

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি

ইন্দোনেশিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিলেন এনএসইউ ভিসি আবদুল হান্নান

১০

অপসারিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসূচি নিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিবৃতি

১১

বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়নের সম্পর্কও দৃশ্যমান : দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত

১২

লাহোরের একাদশে সাকিব, বেঞ্চেই রিশাদ ও মিরাজ

১৩

ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে টেস্ট ৫ নয়, ৪ দিনের—কিন্তু কেন?

১৪

পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি ভারতের

১৫

পাবনায় বালুমহালের আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৭

১৬

‘ঐক্যের ১২টা বাজিয়ে এখন ক্ষমা চাও কেন?’

১৭

সীমান্তে প্রশাসনের পরিচয়ে তারা হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা

১৮

দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঝড়ের কবলে ভারতীয় বিমান

১৯

বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু

২০
X