খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতদের ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (১৯ মে) দুপুর ১২টার মধ্যে এ বিচারিক কার্যক্রম শেষ না করায় প্রশাসনিক কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে টানা ১৪ দিন ক্লাস বর্জনের পর প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকরা যে ফিজিক্যাল ও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে এর প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি চলছে। আজ আমাদের কর্মসূচির নবম দিন। গত ৪ তারিখ থেকে আমরা সব শিক্ষা কার্যক্রম এবং রোববার (১৮ মে) থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে দূরে আছি।’
আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, গতকাল রোববারের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষকরা আজ সোমবার ভিসির কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। কুয়েটের নতুন প্রশাসন কাজের মাঝপথে থেমে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম জিম্মি হয়ে আছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি এবং সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশে ক্লাসে ফেরার জন্য শিক্ষকরা সবাই উদগ্রীব।
তিনি বলেন, এর আগে ৭ কর্মদিবসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তারপর অষ্টম কর্মদিবসে এসে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আবারও সময় দেওয়া হয়েছিল। তারপরও আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। যে কারণে আজকের এ সংকটময় অবস্থা। আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, আজও একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দাবিতে প্রশাসনিক কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিল কুয়েটের পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থী অবিচারের শিকার হোক। এ সময় তারা শিক্ষকদের দাবির সঙ্গেও পূর্ণ আস্থাশীল বলে জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা চাই না নতুন গণতন্ত্র কমিটি হোক। এমনকি নতুন যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কথা বলা হয়েছে আমরা এটার পক্ষেও নেই। এরই মধ্যে আমাদের তিন মাস পার হয়ে গেছে। এখন যদি নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় তাহলে একটা দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করবে।
কুয়েটের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকদের দাবি অযৌক্তিক নয়। তাদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত হন। এর পর থেকেই ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। একপর্যায়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন