শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-এর সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ৭৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফুলবাড়িগেট এলাকায় পোস্টার লাগানো হয়।
ফুলবাড়িগেট এলাকায় রোববার (২৫ মে) এসব পোস্টারিং করা হয়।
পোস্টারগুলোতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম, ছবি এবং রোল নম্বর উল্লেখ করে তাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয়দের কাছে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ব্যানারে আরও লেখা হয়, এরা শিবিরের সক্রিয় সদস্য, যারা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার নেতৃত্ব দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থে লিপ্ত।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজিদুল জানান, ‘আমাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আমরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে ভিসিকে অপসারণ করেছি, এটাই আমাদের অপরাধ। এর আগেও আমাদের স্থানীয়রা ‘ভিসিকে নামাইলি কেন’ বলেই মারধর করেছে। আমাদের ৩৭ শিক্ষার্থীকে প্রথমে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও, পরে সেটি চাপের মুখে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর আবার তাদেরই বহিষ্কার করতে শোকজ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করে ভিসির কাছে তিন দফা দাবি তুলে ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায়, ভিসিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। থাকলে তার প্রমাণ দেখাক কিন্তু এরকম অপপ্রচার গ্রহণযোগ্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে কমিটি দেওয়া হয়েছিল পরে সংঘঠনটির আহ্বায়ক উমামা ফাতেমা এক বিবৃতিতে সেটা বাতিল ঘোষণা করে। সুতরাং এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। আমাদের যে নাম রোল ব্যবহার করা হয়েছে এটা প্রশাসন থেকে সরবরাহ করা হয়েছে বলে মনে করি।’
এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা থানায় জিডি করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কুয়েট প্রশাসনের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ডক্টর আব্দুল্লাহ ইলিয়াস বলেন, এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। আর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। এজন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৯৭ দিন ধরে কুয়েট ক্যাম্পাস বন্ধ এবং কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি নিযুক্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. হযরত আলীও পদত্যাগে বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন। অভিভাবকহীন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে অনেকেই ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন।
মন্তব্য করুন