নানা সমস্যায় জর্জরিত সরকারি বাঙলা কলেজের প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম ছাত্রাবাস। সাপ, মশা এবং দুর্গন্ধের সঙ্গে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস মিললেও সমস্যা সমাধানে এখন পর্যন্ত কোন আশানুরূপ উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রাবাসটি বন্ধ ছিল। পরে ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর এটি পুনরায় খোলা হলেও কোনো সংস্কার করা হয়নি, নেওয়া হয়নি কোনো উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্রাবাসে আসবাবপত্র তুলনামূলক কম। যেসব চেয়ার-টেবিল রয়েছে, সেগুলোর অবস্থাও খারাপ। পড়ার রুম থাকলেও নেই চেয়ার-টেবিল কিংবা বৈদ্যুতিক ফ্যান। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
এ ছাড়া মশা ও দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের দমবন্ধ হওয়ার মতো। বেসিন থেকে পানি গড়িয়ে মেঝেতে গিয়ে জমে। কখনো সেই নোংরা পানি কক্ষের ভেতরেও ঢুকে পড়ছে, ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
ছাত্রাবাসের সামনে দেখা গেছে আবর্জনার স্তূপ, ঝোপঝাড়। এতে বিষাক্ত পোকামাকড়ের পাশাপাশি সাপের আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা প্রায়ই সাপের মুখোমুখি হচ্ছেন। অভিযোগ জানানোর জন্য অফিস কক্ষে হোস্টেল সুপারের দেখাও মেলে খুব কম।
আবাসিক শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, আমরা বারবার কলেজ প্রশাসনের কাছে গিয়েছি, কিন্তু শুধু আশ্বাসই পেয়েছি। ছাত্র প্রতিনিধি সভা হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অধ্যক্ষের কাছ থেকেও কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি।
আরেক শিক্ষার্থী, নাম প্রকাশ না করার শর্তে, বলেন, আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার কামরুন নাহার বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রাবাসের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমরা নানা উপায়ে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার চেষ্টা করছি। এ বছরের জন্য পাঁচ লাখ টাকার বাজেট এসেছে, দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
এ বিষয় জানতে চাইলে বাঙলা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাঁচ লাখ টাকার একটি বাজেট এসেছে, সেটি কার্যকর হলেই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন