বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেফমুবিপ্রবি) গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ফিশারিজ বিভাগের একই বর্ষের ছয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
গত ২৮ আগস্ট এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শায়লা সাদিকা শ্রুতি বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মৌসুমী আক্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ফিশারিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের ফাতেমা বিনতে হোসাইন নিশি, মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ, তাহরিন তাসমিয়া সিদ্দিকি হৃদী, মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, ফারহানুল হক প্রান্ত, হাবিবুর রহমান অন্তর।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শায়লা সাদিকা শ্রুতি বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে মাঝেমধ্যেই রুমে কান্না করতাম। আমার রুমে নিশি আপুও থাকেন। সে বিষয়টি অনেকভাবে জানতে চাইলে পরবর্তীতে আপুকে আমার ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করি। এরপর থেকেই নিশি আপু আমার গোপনীয় বিষয়টাকে পুঁজি করে মানসিকভাবে অত্যাচার করতে থাকে এবং বিষয়টি সবার কাছে জানিয়ে দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখায়।
এরপর গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ফিশারিজ বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নিশি, হৃদি, খাইরুল, প্রান্ত, সুরাদ ও অন্তর ভাই মিলে ছাত্রী হলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মানসিক নির্যাতন ও অপমান করে। পরের দিন ২৮ তারিখ আমার পরীক্ষার কথা জেনেও তারা আমার সঙ্গে এমন আচরণ করে। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পরি। পরে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরের দিন সকালে আমাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই আমার শরীরের বামপাশ অবশ হয়ে পরে যা এখনো কিছুটা আছে। হাসপাতালে আমার বেশি খারাপ হওয়ায় চিকিৎসক আমাকে ১২টি ইঞ্জেকশন দেয় এবং অন্যান্য চিকিৎসাসেবা দেয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকায় আমি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। পরবর্তীতে বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটির বরাবর অভিযোগ দেই।
তিনি বলেন, আমার লেখাপড়ার শেষ পর্যায়ে এসে র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছি। যা আমার প্রত্যাশার বাইরে। তাই এমন একটা শাস্তি দাবি করছি যে শাস্তি দিলে আমার সাথে যেমনটি করা হয়েছে ভবিষ্যতে যেন কোনো শিক্ষার্থীর সাথে এমন না করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নিশি কালবেলাকে জানান, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। শ্রুতির বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে তার একটা ঝামেলা হয়েছিল। তার বয়ফ্রেন্ডই তাকে এবং আমাদের ডেকেছিল। পরবর্তীতে সবই স্বাভাবিক ছিল কিন্তু ঘটনার পরেরদিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়টির বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ফিশারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌসুমী আক্তার বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত করে আজ (সোমবার) প্রতিবেদন রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দিয়েছি।
মন্তব্য করুন