

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজের এক কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রমে ভবিষ্যতে যুক্ত হবে না, এমন শর্তে মুচলেকা নিয়ে ওই কর্মীকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা কলেজের কেন্দ্রীয় মাঠ থেকে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। এরপর রাত ৮টার দিকে তাকে নিউমার্কেট থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম রাসেল রানা। তিনি ঢাকা কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত রাসেল রানার সহপাঠীরা জানান, ২০২৩ সালে তিনি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ছাত্রলীগের সহায়তায় হলে থাকতেন। ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তিনি ছাত্রলীগের হয়ে বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সহপাঠীদের বিভিন্ন সময়ে হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর সাইন্সল্যাবে ছাত্রলীগের হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ফুটেজে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই অভিযুক্ত রাসেল রানা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে মাথায় রুমাল বেধে সাইন্সল্যাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্দেশে হামলা করছেন।
থানায় সোপর্দ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা কলেজের সম্বন্বয়ক বলেন, ‘রাসেল রানা হাসিনার শাসনামলে হলে থাকতেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে পুরোপুরি সক্রিয় ছিল, এখনো আছে। যার প্রমাণ আমরা তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে পেয়েছি। সে এখনো নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত আছে, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার তথ্য তার মোবাইল থেকে পাওয়া গেছে। এজন্য আমরা তাকে ধরে পুলিশে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম মাহফুজুল হক বলেন, ‘বর্তমানে সে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রমে নাই। তাই তার শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য এবং ভবিষ্যতে সে আর এ ধরনের কার্যক্রমে জড়িত হবে না, এই শর্তে তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া হচ্ছে। পরবর্তীতে সে আবার সক্রিয় হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে একটি গরীব ঘরের সন্তান, সে এখানে লেখাপড়া করতে এসেছে। এটুকু তো তার জন্য আমাদের ছাড় দিতেই হবে।’
মন্তব্য করুন