ঢাকা কলেজের আবাসিক হলে কর্মরত দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনার রেস কাট না কাটতেই ফের গেস্টরুমে তিন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে উত্তর ছাত্রাবাসের ১২০ নাম্বার কক্ষে (গেস্টরুম) এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ওইদিন রাতে ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসের ১২০ নম্বর কক্ষে ১ম বর্ষের ৩ জন শিক্ষার্থীকে ডাকেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা। তিন শিক্ষার্থী ওই কক্ষে প্রবেশের সাথে সাথে ম্যানার শেখানোর নামে তাদের বেধড়ক মারধর ও নির্যাতন করে তারা। মারধরের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- উত্তর ছাত্রাবাসের ২০২১-২২ সেশনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহান ও ভূগোলের শিক্ষার্থী রাকিব বিন রাজু।
অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন- ২০২০-২১ সেশনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জুনাইদ, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিনুর ও রকি। তারা সবাই উত্তর ছাত্রাবাসের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা মুশফিকুর রহমান মাসুদের অনুসারী বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা কলেজের ১২০ নাম্বার রুমে নিয়ে ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের ম্যানার শেখানোর নামে মারধর করেছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী। আমাদের মেরে হাত ভেঙে ফেলেছে। একজনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।
তবে, মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছে অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জুনাইদ কালবেলাকে বলেন, নিজেদের বন্ধুদের সাথে ওরা মারামারি করেছে। এটা বড় ভাইরা গতকাল রাতে সমাধান করে দিয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিনুর কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা বন্ধুদের সাথে ঝামেলা করেছে। পরে সিনিয়ররা মীমাংসা করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে উত্তর ছাত্রাবাসের প্রাধ্যক্ষ ওবায়দুল করিম বলেন, আমি সকালে শুনেছি। আমি দিনে গিয়ে ওদের সাথে কথা বলেছি। তারা একই এলাকার। তারা বলছে, তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ কালবেলাকে বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তারা উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি মীমাংসা করেছে।
মন্তব্য করুন