পরীক্ষার দাবিতে বিভাগীয় অফিসে তালা লাগিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় দুপুর ২টার দিকে প্রধান ফটকে তালা লাগায় তারা। এতে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের বাসগুলো আটকা পড়ে। এ দিকে একই দিনে সকালে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগ থেকে প্রকাশিত রুটিনে গত ৩১ অক্টোবর পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তবে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন এ ব্যাচের ১ম বর্ষের নন-ক্রেডিট কোর্সে সাতজন ফেল করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী নন-ক্রেডিট পরীক্ষায় ফেল করলে ২য় বর্ষের মধ্যে তাকে সেই কোর্সে পাস করতে হবে। ২য় বর্ষের মধ্যে পাস করতে অপারগ হলে ৩য় বর্ষে প্রমোশন পাবেন না তিনি। এদিকে ২য় বর্ষে পাস না করলেও ভুলবশত তাদের ৩য় বর্ষে প্রমোশন দেয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের দাবি, অক্টোবরের ২য় সপ্তাহে বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে নন-ক্রেডিট কোর্সের পরীক্ষা প্রদানের জন্য আবেদন করেন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা। এ দিকে প্রায় একমাস পরে ১১ নভেম্বর শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনাক্রমে নন-ক্রেডিট পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করে বিভাগটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ১১ নভেম্বর বিভাগ থেকে একটি আবেদন পাঠিয়েছিল। ভিসি উপস্থিত না থাকায়, পরে গত পরশু সেই ফাইল নিয়ে ভিসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। এ সময় ভিসি স্যার বলেছেন, প্রো-ভিসি ও বিভাগের সভাপতিকে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করে ভিসির কাছে আসতে বলেন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের শনিবার বিভাগে আসতে বলেন। শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার (২৫ নভেম্বর) তারা বিভাগে আসলে সভাপতি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছি।’
সভাপতির বক্তব্যে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস না পেয়ে বিভাগীয় অফিসে তালা দেন তারা। পরে ২টার দিকে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা শেষেও কোনো সমাধান না পাওয়ায় প্রধান ফটক অবরোধ করেন তারা। এ সময় আগামীকাল আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামীকাল এ বিষয়ের সমাধান না হলে আবারও আন্দোলনে নামবেন তারা।
এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নন-ক্রেডিট কোর্সের আবেদন করার পরই আমি বিভাগীয় অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিং ডেকেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত শিক্ষক উপস্থিত না হওয়ার ফলে আমরা মিটিং করতে পারিনি। পরে আবারো মিটিং ডেকে ১১ নভেম্বর প্রশাসনের কাছে পরীক্ষার অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলাম।’
পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চাওয়া পূরণ করতে পারছিলাম না এ কষ্ট থেকে আমি পদত্যাগ করেছিলাম। পদত্যাগ করার পর আমি জানতে পারলাম যে ভিসি স্যার আমাকে প্রোভিসি স্যারের সাথে কথা বলতে বলেছে। তবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দরকার পড়লে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, যেহেতু এটা বিভাগের বিষয়, বিভাগের এর সমাধান হবে। এটা নিয়ে প্রধান ফটকে তালা দেওয়া অযৌক্তিক।
মন্তব্য করুন