ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যায় জড়িতদের সবাইকে গ্রেপ্তার, ঘটনাস্থলের ও অভিযুক্তদের চিকিৎসা নেওয়ার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে শাহবাগ থানার সামনে গিয়ে অবস্থান নেন তারা।
এরপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল শাহবাগ থানা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে তিন দফা দাবি জানায় এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানানো হয়। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে থানা ছেড়ে আসেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ মূল আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এর মধ্যে তারা (পুলিশ) আসামি ধরার ক্রেডিট নিচ্ছে।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আফসার উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, পুলিশ এখনো মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি এ ব্যাপারে তাদের কাজের অগ্রগতির কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলা একাডেমি ও কালী মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে এবং শমরিতা হাসপাতালে আসামিরা যে চিকিৎসা নিয়েছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করলে আসামিদের শনাক্ত করা সহজ হবে, কিন্তু পুলিশ এসব কাজের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পুলিশ যেখানে মূল ঘটনার কোনো কারণ উদঘাটন করতে পারে না, সেটা পুলিশের ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি পুলিশকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। কিসের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে তা আমরা জানি না। শাহবাগ থানার নাকের ডগায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এখানকার সব অপকর্মের খোঁজ পুলিশ জানে। এমনকি তারা এর সঙ্গে যুক্ত আছে। না হলে কিভাবে উদ্যানে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলে? পুলিশ প্রশাসনকে এর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ৪৮ ঘণ্টা আলটিমেটাম দিয়ে আসছি, প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।
কেউ কেউ বলছেন সাম্যের হত্যা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল টালবাহানা করছে। ইনস্টিউটের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মুন্সী বলেন, এটি একটি নির্দলীয় ব্যানার। সাম্যর লাশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল টালবাহানা শুরু করেছে। তাদের মুখ্য দাবি বিভিন্ন জনের পদত্যাগ। কিন্তু আমাদের প্রধান দাবি, সাম্য হত্যার বিচার। সাম্য হত্যার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে যে ছুরিকাঘাত করেছিল, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করতে পারলে আমরা শাহবাগ থানা ঘেরাও কর্মসূচি দেব।
এর আগে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের আসেন। পরে সেখান থেকে তারা সাম্য হত্যার ‘অগ্রগতি’ জানতে শাহবাগ থানায় যান। এ সময় তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির কয়েকজন শিক্ষকও।
মন্তব্য করুন