নিয়োগে অনিয়ম, জাল সনদ ব্যবহার এবং অযোগ্য প্রার্থীদের এমপিওভুক্তির চেষ্টার অভিযোগে দেশের চারটি দাখিল মাদ্রাসার প্রধানদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিএমই)। একই ধরনের অভিযোগে আরও পাঁচটি মাদ্রাসার প্রধানদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ডিএমই সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা, যশোর, ময়মনসিংহ ও ভোলা জেলার সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাগুলোতে নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং একাধিকবার এমপিওর জন্য আবেদন করা হয়েছে। আবেদনকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাদ্রাসা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী না থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
শোকজপ্রাপ্ত মাদ্রাসাপ্রধানরা:
* গাইবান্ধার মনোহরপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. আবদুল জলিল: সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) পদে লাকী বেগম নামের একজন অযোগ্য প্রার্থীর জন্য বারবার নতুন এমপিও আবেদন জমা দিয়েছেন, যা পূর্বে নিষেধ করা হয়েছিল।
* যশোরের বাজেদুর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসা ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. হাসানুজ্জামান: জাল ও অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ইবতেদায়ী প্রধান, ক্বারী ও অফিস সহকারী পদে তিনজন কর্মচারীর এমপিওর জন্য আবেদন করেছেন।
* ময়মনসিংহের বাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. বুরহান উদ্দিন: এনটিআরসিএর ভুয়া ও জাল সনদপত্র দিয়ে দুই শিক্ষক-শাকিল ও সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়োগ দিয়ে এমপিওর আবেদন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
* ভোলার দক্ষিণ জয়নগর রহিমা বেগম ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. নূরুল আমিন: সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হিসেবে জনাব ইউনুসের জন্য বারবার এমপিও আবেদন পাঠিয়েছেন, যদিও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না।
চারটি পৃথক চিঠিতে এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এমপিও নীতিমালা ১৮ দশমিক ১ (গ) ও (ঙ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে ১৬ ও ১৭ জুনের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ও এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সদস্য সচিব মো. শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ধরনের অনিয়ম সরকারি অর্থ অপব্যবহারের শামিল। এ কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এমপিও স্থগিতসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তদন্তাধীন আরও পাঁচ মাদ্রাসাপ্রধান
এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে আরও পাঁচ মাদ্রাসা প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
* গাইবান্ধার চকশালাইপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেন
* লালমনিরহাটের আউলিয়ারহাট কাজী নিজামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আছাদুজ্জামান
* রংপুরের ভাংনী আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোফরান আলী ওয়াহেদী
* খুলনার বেজপাড়া হায়াতুন্নেচ্ছা দাখিল মাদ্রাসার সুপার এ কে এম আজহারুল ইসলাম।
তাদের বিরুদ্ধেও অযোগ্য প্রার্থীর পক্ষে একাধিকবার এমপিও আবেদন ও জাল কাগজপত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায়ও শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ডিএমই সূত্রে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন