পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও খাতা মূল্যায়নের মতো সংবেদনশীল বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিক্ষা প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ফেসবুকসহ সব সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)’ এবং সদ্য প্রণীত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ অনুযায়ী অনলাইন আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হানিকর ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা সামাজিকমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য, ছবি বা মতামত প্রচার করতে পারবেন না যা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে, প্রশাসনিক গোপনীয়তা ভঙ্গ করে বা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একটি মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার ঘটনা এবং এর আগে এইচএসসি খাতা মূল্যায়নের ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। উভয় ক্ষেত্রেই শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।
মাউশির নির্দেশনায় স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের নিজস্ব ফেসবুক, টিকটক বা ইউটিউব আইডিতে ব্যক্তিগত মত প্রকাশের সময় সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি মেনে চলবেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও স্কুল-কলেজ প্রশাসনকে সক্রিয় নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে, যাতে পরীক্ষার প্রশ্ন, ফলাফল বা গোপন নথি সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে না পারে।
অধিদপ্তর মনে করে, দায়িত্বশীল আচরণ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের উপস্থিতি এখন বড় ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘ডিজিটাল নৈতিকতা’ ও ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা’ বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজনেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
এক কর্মকর্তা কালবেলাকে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত। তাই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল ব্যবহার না হলে সেটি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
মন্তব্য করুন