ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত রক্তের শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই সুগার মাপা ভালো, নাকি প্রাতরাশের এক–দুই ঘণ্টা পর?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি পেটে রক্তে শর্করার পরিমাণ মাপাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এভাবেই জানা যায়, খাবার গ্রহণের আগে শরীরে প্রকৃত শর্করার অবস্থা কেমন।
কেন খালি পেটে সুগার মাপা গুরুত্বপূর্ণ
দিনের মধ্যে আমরা যখন খাবার খাই, তখন স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই খাবারের প্রভাব এড়িয়ে খালি পেটে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করলে সবচেয়ে নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়। এতে বোঝা যায়, খাবার ছাড়া শরীর কতটা স্বাভাবিকভাবে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে। কারও যদি খালি পেটে সুগার বেশি পাওয়া যায়, তবে সেটি ইনসুলিন প্রতিরোধ বা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
কখন মাপবেন রক্তের শর্করা
চিকিৎসকরা বলছেন, ঘুম থেকে ওঠার পরপরই রক্তের শর্করা মাপাই সবচেয়ে ভালো। রাতের টানা ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা না খাওয়ার পর শরীরের প্রকৃত গ্লুকোজ লেভেল তখনই জানা যায়।
অন্যদিকে প্রাতরাশের ১-২ ঘণ্টা পর সুগার মাপলে দেখা যাবে শর্করার পরিমাণ বেশি। কারণ খাবার খাওয়ার পর শরীরে গ্লুকোজ বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, খালি পেটে প্রাপ্ত শর্করার মান থেকে বোঝা যায়, শরীর রাতে কীভাবে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে,আর খাবারের পর মাপা শর্করার মান থেকে জানা যায় শরীর খাবারকে কতটা দক্ষভাবে প্রক্রিয়া করছে।
বিশেষ পরামর্শ
রক্তের শর্করা মাপার আগে অন্তত ৮ ঘণ্টা উপোস থাকা উচিত। ঘুম থেকে উঠেই পানি, চা বা কফি পান না করে রক্তের শর্করা মাপলে ফলাফল সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হয়। নিয়মিত একই সময়ে পরীক্ষা করলে নিজের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের ধারা সহজেই বোঝা যায়।
সারকথা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিয়মিতভাবে খালি পেটে রক্তের শর্করা পরীক্ষা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে শরীরের ইনসুলিন কার্যকারিতা ও গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ; দুটিরই সঠিক ধারণা পাওয়া যায়, যা চিকিৎসকের পরবর্তী পরামর্শ নির্ধারণে সহায়ক হয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
মন্তব্য করুন