পূজা মানেই সাজগোজ, নতুন জামাকাপড়, ছবি তোলা, আর একরাশ আনন্দ। কিন্তু তার সঙ্গে আসে একটাই চিন্তা—চুলের হাল ঠিক নেই! চুল পড়ে যাচ্ছে, রুক্ষ লাগছে, আগার দিক ফেটে যাচ্ছে আবার পাতলাও হয়ে যাচ্ছে। তখনই অনেকেই ছুটে যান পার্লারে—কেরাটিন, স্মুদিং বা বোটক্স করাতে। এতে সাময়িক ফল মেলে ঠিকই, কিন্তু কিছুদিন পর আবার সেই একই সমস্যা।
কিন্তু সব সময় তো আর এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়, আর সবচেয়ে বড় কথা—এগুলো চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন : রোজ শ্যাম্পু করছেন? চুলের জন্য ভালো না ক্ষতিকর জেনে নিন
আরও পড়ুন : ভিটামিন সি’র অভাবে শরীরে দেখা দেবে যে তিন সমস্যা
তাই আসুন, এবারের পূজার আগে একটু ঘরোয়া যত্ন নিই। কম খরচে, কম সময়েই ফিরিয়ে আনুন চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ও স্বাস্থ্য।
চুলের যত্নে প্রথম ও প্রধান বিষয় হল আদ্রতা। চুল শুষ্ক হয়ে গেলে রুক্ষ দেখায়, ভেঙে যায়, ফ্রিজি হয়ে পড়ে।
কীভাবে আর্দ্রতা বজায় রাখবেন:
- কন্ডিশনার নিয়মিত ব্যবহার করুন
- সপ্তাহে ১-২ বার হেয়ার মাস্ক লাগান
-অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না
- চুল ধোয়ার সময় খুব গরম জল এড়িয়ে চলুন
টিপস: কন্ডিশনার ব্যবহারের সময় শুধু চুলের দৈর্ঘ্যে লাগান, চুলের গোড়ায় নয়।
ভালো মানের হেয়ার মাস্ক চুলের গভীরে গিয়ে পুষ্টি জোগায়, চুলকে নরম, কোমল ও প্রাণবন্ত রাখে।
ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক রেসিপি:
উপকরণ:
- ১টা পাকা কলা
- ১ চামচ মধু
- ২ চামচ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল
পদ্ধতি: সব মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মাথায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রেখে দিন, তারপর শ্যাম্পু করুন।
শ্যাম্পু করলেই স্ক্যাল্প পুরো পরিষ্কার হয় না। মাঝে মাঝে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার (ACV) ব্যবহার করলে চুল হয় ঝলমলে ও স্ক্যাল্প থাকে ফ্রেশ।
ব্যবহারবিধি:
- ১ কাপ পানির সঙ্গে ২ টেবিলচামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে শ্যাম্পুর পর রিন্স করুন
- ৫-৭ মিনিট রেখে দিয়ে ঠান্ডা বা কুসুম গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
এতে চুলে থাকবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা, কোনও কেমিক্যাল ছাড়াই।
পূজার কয়দিন চুল স্টাইল করতে চাইতেই পারেন, কিন্তু তার আগে যদি প্রতিদিন স্ট্রেইনার, ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করেন, তাহলে চুলের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হয়ে যাবে।
কেন হিট স্টাইলিং ক্ষতিকর?
- চুল শুকিয়ে যায়
- রুক্ষতা বেড়ে যায়
- ফ্রিজিনেস ও চুল ভাঙা বাড়ে
- চুল পাতলা হতে শুরু করে
টিপস: চুল ধোয়ার সময়ও গরম জল নয়, ঠান্ডা বা কুসুম গরম জল ব্যবহার করুন।
শুধু বাইরের যত্ন নিলেই হবে না, শরীরের ভিতর থেকেও পুষ্টি দিতে হবে।
কী খাবেন:
- ডিম, মাছ, ডাল, বাদাম (প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার)
- পালং শাক, বিট, ডার্ক চকলেট (আয়রনসমৃদ্ধ)
- পর্যাপ্ত পানি খান (দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস)
- অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, কোলা, চিনি কমান
আরও পড়ুন : খালি পেটে গরম পানিতে হবে ম্যাজিক!
আরও পড়ুন : ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস কারা খাবেন, কারা খাবেন না
এই পূজায় আর কেমিক্যাল নয়— প্রাকৃতিক যত্নেই হোক আপনার রূপের উৎসব। চুলের যত্ন নিন নিজের মতো করে, নিজের সময়মতো। নিয়মিত যত্ন নিলে চুল ঝলমলে হবেই আর তার সঙ্গে বাড়বে আপনার আত্মবিশ্বাস।
নিজেকে সময় দিন, ভালোবাসুন আর এই পূজায় নিজের রূপে নিজেই মুগ্ধ হন!
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন