নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে খুলনার ডেঙ্গু পরিস্থিতি। খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ডেঙ্গু চিকিৎসা নিচ্ছে আড়াইশ ডেঙ্গু রোগী। আর ডেঙ্গু চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া নরমাল স্যালাইন নিয়ে হাহাকার তৈরি হয়েছে খুলনায়। সরকারি হাসপাতালে স্যালাইন শূন্য। বাইরে দ্বিগুণ টাকায়ও মিলছে না কোনো স্যালাইন। ফলে ডেঙ্গু চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ পদক্ষেপ দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন খুমেক হাসপাতালে কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের মজুদ থেকে রোগীদের ডেঙ্গু চিকিৎসায় সব থেকে বেশি ব্যবহৃত নরমাল স্যালাইন শেষ।
স্টোর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত ১৫ জুন ৫০০ এমএলের ১৫০০ পিস স্যালাইন আসছে ইডিসিএল থেকে। এরপর স্যালাইন শেষ হওয়ার পর শনিবার ও হাসপাতালের সংকটের কথা উল্লেখ করে ইডিসিএলের কাছে চিঠি লিখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি ৩ হাজার পিস স্যালাইন এসেছিল এই হাসপাতালে।
এদিকে খুলনায় বিভিন্ন ফার্মেসিতে ঘুরে নরমাল স্যালাইন (এনএস) স্যালাইন পাওয়া যায়নি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনেসহ বেশ কয়েকটি ফার্মেসির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্যালাইন শেষ। পরে না আসা পর্যন্ত আর নরমাল স্যালাইন বিক্রি সম্ভব না।
নুসরাত জাহান নামে নগরীর গল্লামারী এলাকা থেকে আসা এক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৬ দিন ধরে খুমেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সকাল-বিকেল চিকিৎসক এসে খোঁজ নিলেও নাপা আর গ্যাসের ওষুধ ছাড়া বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে সব ওষুধ। তবে গত দুই দিন ধরে নরমাল স্যালাইন বাইরেও পাওয়া যাচ্ছে না।
একই ধরনের অভিযোগ জানিয়েছেন দ্বিতীয় তলার সোবাহান (৫৫), সোহাগ (৩৩), সালমা (২৪)। তারা বাইরে থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে কিনতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।
খুলনা কেমিস্ট্র অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবলু বলেন, সারা দেশেই ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্যালাইন সংকট রয়েছে। খুলনায় কিছুদিন ধরে সংকট চরম আকার ধারণ করছে। অগ্রিম টাকা দিয়েও কোম্পানিগুলো স্যালাইন দিতে পারছে না। যদি কোনো ফার্মেসির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত দামে স্যালাইন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে কোন হাসপাতাল নরমাল স্যালাইন শূন্য। চিঠি এবং মোবাইলের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ওষুধ কোম্পানি ইডিসিএলকে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ তারা ১২ তারিখে কিছু স্যালাইন দেওয়ার কথা বলেছে। যদি স্যালাইন আসে তাহলে রোগীদের স্যালাইন দেওয়া সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন