টাইফয়েড টিকা নিয়ে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমিরুল হক। তিনি বলেন, গুজব হলো আমাদের বড় প্রতিবন্ধকতা। এটি কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) সকালে জেলা তথ্য অফিস আয়োজিত ও সিভিল সার্জন অফিসে অনুষ্ঠিত টাইফয়েড টিকা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরামর্শমূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান।
নরসিংদীর সিভিল সার্জন বলেন, গুজব প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ টিকা নিলে শিশু-কিশোরদের কোনো সমস্যা হবে না। এ ছাড়া কোনো তথ্য পেলে যাচাই করে পরে পরিবেশনের অনুরোধ জানান তিনি।
সিভিল সার্জন জানান, নরসিংদী জেলার ছয়টি উপজেলায় ৬ লাখ ১৫ হাজার ৭২২ জন শিশু কিশোরের মাঝে ‘টাইফয়েড টিকা’ প্রদান করা হবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু এবং প্রাক প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি/সমমান পর্যন্ত সবব শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ১ ডোজ টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে।
দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের উরুর মাংসপেশিতে এবং দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের বাহুর উপরিভাগে ০.৫ এম.এল. ইনজেকশন দেওয়া হবে। শিশু ও কিশোরদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টাইফয়েড টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযাযী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে। তবে আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাসকারী মানুষ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই রোগে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে অনেক বেশি। দি গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিস এর সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার জন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং ৮ হাজার জন মৃত্যুবরণ করেন। যার মধ্যে ৬৮ শতাংশই শিশু।
নরসিংদী জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. ওয়াইদুল কাবির মোল্লার সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিডি মো. ইউসুফ আলী, নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নিবারণ চন্দ্র রায় এবং সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন।
‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন’ সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. তৃষা জাফরীন। আর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী তথ্য অফিসার আফসানা আখতার।
মন্তব্য করুন