এ যেন এক অন্যরকম অক্টোবর। ভাদ্র পেরিয়ে আশ্বিন চলছে এর পরও আকাশে মেঘ, বৃষ্টি আবার বজ্রবৃষ্টি, কোথাও আবার ভ্যাপসা গরম। কিন্তু অক্টোবর মানেই তো শরতের সাদা আকাশ, বাতাসে শীতের আগমনী বার্তা। অক্টোবরের এমন আচরণকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন অনেকেই।
অক্টোবরের এমন আচরণকে নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়েই বিদায় নেবে মৌসুমি বায়ু। এরপর ধীরে ধীরে কমতে পারে বৃষ্টি। তবে তাপমাত্রা কমতে পারে খুব ধীরে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আগের বছরের সঙ্গে এবারের অক্টোবরের আবহাওয়ার অবস্থা মেলানো যাবে না। যেহেতু মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বিদায় নিতে দেরি হবে, সেহেতু বৃষ্টির প্রবণতাও থাকবে আরও কিছুদিন। সাধারণত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়। কিন্তু এবার মৌসুমি বায়ু এখনো বিদায় নেয়নি।
এদিকে অক্টোবরজুড়ে আবহাওয়া কেমন থাকবে এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, বাংলা ঋতু অনুযায়ী আশ্বিন ও কার্তিক মাসে শরৎকাল, তারপর অগ্রহায়ণ ও পৌষে হেমন্ত। এই সময়টাতেই শীতের আগমন ঘটে। কিন্তু এবার মৌসুমি বায়ু কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার ফলে শরতের স্বাভাবিক শুষ্কতা এখনও নামেনি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাতে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও অক্টোবরজুড়ে দিনে গরম থাকবে।
আবহাওয়াবিদ আরও জানান, আগামী ১২ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এরপর মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়বে এবং ধীরে ধীরে বিদায় নেবে।
তাহলে শীত কবে থেকে পরতে পারে এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, এখনও শীতের কোনো আভাস নেই। বরং পুরো অক্টোবরজুড়ে থাকতে পারে ভ্যাপসা গরমের দাপট। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া ভ্যাপসা থাকবে। তবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। তখনই ঠান্ডার ছোঁয়া টের পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এখন যেসব এলাকায় কুয়াশা দেখা যাচ্ছে, তা শীতের কারণে নয়। এখনকার কুয়াশা মূলত আর্দ্রতা বা মেঘের প্রভাবে তৈরি হচ্ছে। এটিকে শীতের কুয়াশা বলা যাবে না।
অক্টোবরের এমন অস্বাভাবিক আচরন নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, চলতি বছর এলনিনো প্রভাবের কারণে মৌসুমি বৃষ্টির ধারা দীর্ঘায়িত হয়েছে। ফলে শীতও কিছুটা দেরিতে নামবে। নভেম্বরের আগে ঠান্ডার আমেজ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
মন্তব্য করুন