

ক্যানসার— শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে ভয় কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে রোগটি যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে উদ্বেগ বাড়াই স্বাভাবিক। তবে সুখবর হলো, ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। কারণ গবেষণা বলছে, আমাদের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন অভ্যাসই এই রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলোতে পরিবর্তন আনতে পারলে ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমে যায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বিখ্যাত চিকিৎসক ড. এরিক বার্গের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রকাশ করেছে, যা নিয়মিত মেনে চললে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
পরামর্শগুলো দেখার আগে চলুন জেনে নিই, ক্যানসার আসলে হয় কীভাবে?
এ বিষয়ে ড. এরিক বলেন, ক্যানসার বুঝতে হলে প্রথমে জানতে হবে কীভাবে এটি তৈরি হয়। আমাদের শরীরের কোষে থাকা মাইটোকন্ড্রিয়া যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন কোষের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এই নিয়ন্ত্রণহীন কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে— এটাই ক্যানসার। তাই ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াকে সুস্থ রাখা সবচেয়ে জরুরি।
কী করলে ক্যানসার দূরে থাকবে?
১) পরিশোধিত খাবার বাদ দিন
ড. এরিকের মতে, ক্যানসার প্রতিরোধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো খাদ্যতালিকা থেকে পরিশোধিত খাবার বাদ দেওয়া। যেমন-পরিশোধিত চিনি, পরিশোধিত তেল, স্টার্চযুক্ত খাবার ইত্যাদি। এসব খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং কোষের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
২) নিয়মিত রোদ পোহান
ডাক্তাররা পরামর্শ দেন, যত বেশি সম্ভব রোদ পোহানো উচিত। কারণ, আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে, ফলে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। শীতকালে যদি রোদ না পাওয়া যায়, তবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন। মনে রাখবেন, ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য এটি একটি অত্যন্ত জরুরি ভিটামিন।
৩) উপবাস বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং
আপনার রুটিনে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যেখানে আপনি আপনার শরীরকে দীর্ঘ সময় ধরে উপবাসের অবস্থায় রাখেন। এ ছাড়া আপনি দীর্ঘমেয়াদী উপবাসও করতে পারেন। উপবাস মাইটোকন্ড্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এ ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী সিয়াম পালন একটি শ্রেষ্ঠ উপায়।
৪) নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার মাইটোকন্ড্রিয়া সুস্থ থাকে। শুধু তাই নয়, ব্যায়াম ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকন্ড্রিয়াকেও শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
৫) মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন
ড. এরিক বলেন, যতটা সম্ভব মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। এর জন্য আপনি দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে যেতে পারেন, পর্যাপ্ত ঘুমোতে পারেন। এ ছাড়াও আপনার আশেপাশে যারা বিষাক্ত মানুষ আছেন, তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন