

আমাদের মন এবং শরীর একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। যখন আমরা দুঃখ, চাপ বা হতাশার মধ্যে থাকি, তখন শুধু মনকেই প্রভাবিত হয় না, শরীরও তার প্রভাব অনুভব করে। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র বা হার্ট মানসিক চাপের জন্য খুব সংবেদনশীল।
একটি ব্রেকআপ, কাছের কারও মৃত্যু বা দৈনন্দিন জীবনের অতিরিক্ত চাপ- সবই হঠাৎভাবে আমাদের মনে আঘাত দেয়। এর ফলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যা হার্টের পেশি দুর্বল করতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম বা স্ট্রেস কার্ডিওমায়োপ্যাথি বলা হয়। এটি হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক নয়, কিন্তু অস্থায়ীভাবে হার্টকে দুর্বল করে এবং শারীরিক অস্বস্তি তৈরি করে।
আরও পড়ুন : যে ১০ আচরণ ভালো ও সুন্দর সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়
আরও পড়ুন : ভৌতিক সিনেমা মনের চাপ কমায়
গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা হতাশার কারণে হার্টের সমস্যা হতে পারে। তাই কেবল মনের কষ্ট নয়, হার্টেরও যত্ন নেওয়া জরুরি।
ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম কী?
ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম মানে হার্টের পেশি অস্থায়ীভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া। যখন আমরা মানসিকভাবে আঘাত পাই, তখন শরীরের কর্টিসল ও অ্যাড্রিনালিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এই হরমোনগুলো হার্টের পেশিকে দুর্বল করে, যার ফলে বুকের মধ্যে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হয়। হার্টের বাঁ দিকে ভেন্ট্রিকল কিছুটা বেলুনের মতো ফুলে যেতে পারে। তবে এটি সাধারণ হার্ট অ্যাটাকের মতো বিপজ্জনক নয়।
লক্ষণ
ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোমের সময় দেখা দিতে পারে নিম্নলিখিত উপসর্গ
- বুকের ব্যথা বা চাপ
- অস্বস্তি বা অদ্ভুত অনুভূতি
- শ্বাসকষ্ট
- চোখে ঝাপসা বা মাথা হালকা লাগা
সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে এই উপসর্গগুলো কমে যায়।
কেন হয় এই সমস্যা?
মানসিক চাপ এবং ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোমের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক আছে। অতিরিক্ত চাপ বা বিষণ্ণতার সময় শরীরে কর্টিসল হরমোন বাড়ে। এই হরমোন শুধু মনের কষ্ট বাড়ায় না, শরীরেও নানা সমস্যা তৈরি করে:
- ঘুম কমে যায়
- খিদে কমে যায়
- দেহে ব্যথা-যন্ত্রণা
- চোখ-মুখে ক্লান্তি
- চুল পড়া
এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস হার্টের পেশি দুর্বল করে।
কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?
ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম এড়াতে বা দ্রুত ভালো হতে কিছু করণীয়
- মানসিক চাপ কমানো, ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
আরও পড়ুন : ভালোবাসার সম্পর্কে যে ১০ জিনিস নারীর প্রাপ্য
আরও পড়ুন : নারীদের মধ্যে যে ৮ জিনিস খোঁজে পুরুষরা
- পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া
- বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো
- নিজের পছন্দের কাজ করা, যা মন ভালো রাখে
গবেষকরা বলছেন, আমাদের শরীর এবং মন আলাদা নয়। তাই মনের সুস্থতা মানে হার্টের সুস্থতা। মনকে ভালো রাখা মানে হার্টকেও ভালো রাখা।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন