ভাতে-মাছে বাঙালির পরিচয় হলেও সাইড ডিশে চাই সালাদ। তবে সালাদ বলতে কিন্তু বাঙালি শুধু বুঝে লেবু-মরিচ আর শসা-পেঁয়াজ সঙ্গে টমেটো হলে মন্দ হয় না। শসা বা লেবু স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা উপকারী তা বলা অপেক্ষা রাখে না। তবে প্রশ্ন হলো ডায়াবেটিস থাকলে কি কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া যায়? অনেকে বলে ডায়াবেটিস থাকলে কাঁচা পেঁয়াজ একবারেই খাওয়া যায় না। আবার অনেকে বলেন ডায়াবেটিসে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া ভালো। তবে এ বিষয়ে গবেষণা কী বলছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আমেরিকার এন্ডোক্রিন সোসাইটির গবেষকদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁচা পেঁয়াজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁচা পেঁয়াজ হতে পারে একটি কার্যকর উপাদান। ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়ের অনলাইনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে আসে।
তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা পেঁয়াজ কীভাবে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে—
পেঁয়াজের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজে রয়েছে অ্যান্টিডায়াবেটিক উপাদান ‘মেটামরফিন’, যা রক্তের শর্করার মাত্রা প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া পেঁয়াজে থাকা সালফার ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর সঙ্গে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী ভূমিকা রাখে।
পেঁয়াজ খেলে কি কোলেস্টেরল বাড়ে?
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পেঁয়াজ কোলেস্টেরল কমাতেও ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, টোটাল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ সহায়ক। মূলত মেটাবলিক স্বাস্থ্যের জন্য পেঁয়াজকে উপকারী খাদ্য ধরা হয়।
পেঁয়াজ খেলে আরও কী কী উপকারিতা মেলে—
অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য পেঁয়াজ বেশ উপকারী। এতে থাকা ফাইবার হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং পেট সুস্থ রাখে। পাশাপাশি এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি বাড়ায়। প্রিবায়োটিক খাদ্য হিসেবে পুষ্টিবিদরাও নিয়মিত পেঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দেন।
সংক্রমণ প্রতিরোধেও পেঁয়াজ কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতেও পেঁয়াজ উপকারী ভূমিকা রাখে।
কীভাবে পেঁয়াজ খেলে সবচেয়ে উপকারিতা পাবেন?
কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সালাদে ব্যবহার করা। এ ছাড়া ডাল, তরকারি, মাছ বা মাংসেও পেঁয়াজ দিয়ে রান্না করা যায়। স্যুপ কিংবা স্টুতেও পেঁয়াজ যোগ করে খাওয়া সম্ভব। তবে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কাঁচা পেঁয়াজ রাখলে এর উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন