ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুহতারাম সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের নজিরবিহীন পরাজয় নিশ্চিত হয় গত ০৫ আগস্ট। কিন্তু পরাজিত শক্তি নিজেদের অপরাধের পাল্লা আরও ভারী করতে দেশের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে পুরানা পল্টনের আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত বীরদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে কোথাও ডাকাতি, কোথাও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ঘুরেফিরে তাদের সম্পৃক্ততার খবর আসছে। এ পর্যায়ে তারা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ছাত্র-জনতা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীদের পাহারা নিয়ে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, যেখানে দিন-রাত এক করে ছাত্র-জনতা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী এবং মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা সারা দেশে ধর্মীয় উপাসনালয় ও তাদের স্থাপনা পাহারা দিয়ে গোটা পৃথিবীতে নজির স্থাপন করছে, সেখানে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সারা দেশে সড়কে নিরাপত্তা রক্ষায় ট্রাফিকের কাজ করেছে। ভয়াবহ চুরি-ডাকাতি এবং থানা ও অমুসলিমদের বাড়ি-ঘর রক্ষায় দিন-রাত পাহারা বসিয়ে হেফাজত করেছে এবং এখনো তা অব্যাহত রাখছে। এরপরও যারা অমুসলিমদের বাড়ি-ঘর ও উপাসনালয়ে হামলার অজুহাত তুলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, তারা পরাজিত শক্তি, তারা দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু। তারা দেশ ঘুরে দাঁড়াক তা চায় না।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, নতুন উপদেষ্টা পরিষদকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যে টাকা পাচার করেছে, সে পাচারকারীদের এই সরকার অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করবে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা যখন বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে, তখন একদল মানুষ নৈরাজ্য করছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় দখলদারত্ব চালাচ্ছে, লুটপাট করছে, এসবের মূল উদ্দেশ্য ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করা।
তাই ছাত্র-জনতাকে বলব, নৈরাজ্য রোধে পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করুন। সর্বাবস্থায় সতর্ক পাহারা বসিয়ে তাদের অপকর্মকে রুখে দিতে হবে।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম নাসির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল-পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য শায়খুল হাদিস মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরিদী, আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মারুফ, মাওলানা আল আমিন সোহাগ, মুফতি শওকত ওসমান, মাওলানা হাম্মাদ বিন মোশাররফ, ওয়ালী উল্লাহ তালুকদার।
উল্লেখ্য, জাতীয় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে আগামীকাল ১১ আগস্ট ২০২৪, রোববার, সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : কেমন বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন ঘরানার খ্যাতিমান ওলামায়ে কেরাম। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী।