রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে আশ্রিত বাংলাদেশি নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতনকারী উপসচিব মেহেদী হাসানকে অনতিবিলম্বে ফৌজদারি আইনের অধীনে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা নারীপক্ষ।
রোববার (৩০ জুলাই) এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে নারীপক্ষ জানায়, ২৬ জুলাই ২০২৩ প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার খবরে জানা যায়, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে আশ্রিত নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি নারী গৃহশ্রমিকদের নির্যাতন মুক্ত না করে উপসচিব মেহেদী হাসান নিজেই ‘ধর্ষণ’ ও নানা রকমভাবে হেনস্তা করে ‘নারীর ওপর সহিংসতা’- এর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০২০ সালে উপসচিব মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দূতাবাসে আশ্রিত অভিবাসী নারী গৃহশ্রমিক ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। একই বছর সংশ্লিষ্ট দূতাবাস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং তাদের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। পরে তাকে তিন বছর ওএসডি রেখে চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।
‘ধর্ষণ’ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এই অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধন আইন, ২০২০ অনুযায়ী দণ্ডিত হবেন কিন্তু এই অপরাধে অপরাধী মেহেদী হাসানকে কেবল চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, ফৌজদারি আইনে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। যা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলে তাকে কেবলমাত্র ‘সাময়িক বরখাস্ত’ বা ‘বদলি’ প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এক ধরনের বিচারহীনতা। যা অপরাধ দমন না করে বরং আরও অপরাধ সংঘটনকে উৎসাহিত করে।
নারীপক্ষ জোর দাবি জানিয়েছে, উপসচিব মেহেদী হাসানকে অনতিবিলম্বে ফৌজদারি আইনের অধীনে বিচারের আওতায় এনে সুবিচার নিশ্চিত করা হোক। সেইসঙ্গে দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত পরিবীক্ষণ করা, অভিবাসী নারী গৃহশ্রমিকদের সেবা ও সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এবং দূতাবাস সংশ্লিষ্ট সেফহোমগুলোতে আশ্রিত নারীদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মন্তব্য করুন