তৃণমূলের জনগণের কাছে সরকারি সেবা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সব আদেশ-নির্দেশ বাস্তবায়নে নিজেদের পদ ফেরত চান অপসারিত স্বতন্ত্র উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা।
বুধবার (০৭ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তারা। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানরা জানান, তাদের অপসারণ করে জনস্বার্থ রক্ষা হলে বর্তমানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন’র সভাপতি ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইজাদুর চৌধুরী মিলন, এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, ‘ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফোরাম’র আহ্বায়ক লায়লা বানু, ফেরামের সদস্য সচিব মো. হানিফ আহমেদ, রামু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ শিকদার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লায়লা বানু বলেন, আমরা স্বচ্ছ ও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সরকার যথাযথ তদন্ত না করেই আমাদের অপসারণ করেছে।
আব্দুল্লাহ শিকদার বলেন, আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছিলাম। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- বর্তমান অবস্থা তৃণমূলের জনগণকে চোরাবালিতে ফেলে দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়ার ন্যায্য দাবি জানাতে চাই।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তাই জনগণ ও আমাদের দাবি- আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আমরা সঠিকভাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাবো।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইজাদুর চৌধুরী মিলন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। জনগণের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ক হয়ে উঠে না। ফলে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং রাষ্ট্র কর্তৃক নির্দেশিত আদেশ-নির্দেশ বাস্তবায়নে দুর্ভোগ ও হযবরল অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমনকি গ্রামীন জনগোষ্ঠী নাগরিক সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কোনো প্রকার ব্যাখ্যা ও শুনানি ছাড়া একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অপসারণ করা সংবিধানের ২৬, ২৭, ৩১ ও ৫৯ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। দীর্ঘদিন প্রশাসক দিয়ে উপজেলা পরিষদের সেবা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এতে করে জনগণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা, তার দোসর নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নামধারী আওয়ামী ক্যাডারদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জনগণের ভোটে জয়লাভ করেছি। গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে এবং তৃণমূল জনগনের গণ কল্যাণে সার্বিক দিক বিবেচনা করে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে বিজয়ী সব জনপ্রতিনিধিদের পুনরায় স্বপদে বহাল করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার প্রতি আবেদন জানানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন