কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে ইউনেস্কো : পরিবেশমন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি : কালবেলা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি : কালবেলা

সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় ইউনেস্কো বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। সম্প্রতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদের ৪৫তম বর্ধিত সভায় এ প্রশংসা করা হয়।

আজ বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে সুন্দরবনের সুরক্ষা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের উল্লেখযোগ্য সফলতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত সুন্দরবনের সুরক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে। এর ফলস্বরূপ সম্প্রতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদের ৪৫তম বর্ধিত সভায় সুন্দরবন রক্ষায় এক দশকে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। সভায় পরিকল্পিত বনায়নের মাধ্যমে কার্যকর সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের সম্পদের সুরক্ষা বৃদ্ধি করার জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানানো হয়।

মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের আউটস্ট্যান্ডিং ইউনিভার্সাল ভ্যালুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল টেকনোলজি ব্যবহার, সরকারের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান-২০১০ সংশোধন ইত্যাদি পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়েছে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, সুন্দরবনের ওপর উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাব নিরসনের লক্ষ্যে ২০২১ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের স্ট্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট করা হয় এবং এর আলোকে স্ট্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান প্রস্তুত করায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।

তিনি বলেন, করোনা মহামারির কঠিন সময়ে ন্যাশনাল অয়েল অ্যান্ড কেমিক্যাল স্পিল কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ২০২০ গ্রহণ এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব প্রশমনে এটির বাস্তবায়নের জন্য কমিটি সভায় বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য উন্নয়নে যৌথ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এবং এই কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সরকার গাছ কাটা, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনের মোট আয়তনের ৫৩.৫২ শতাংশ রক্ষিত এলাকা থেকে সকল ধরনের সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকার বন্যপ্রাণীর প্রধান প্রজননকাল জুন, জুলাই এবং আগস্ট এই ৩ মাস সুন্দরবন থেকে সকল ধরনের বনজদ্রব্য সংগ্রহ এবং পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ২০২১ সাল থেকে রাস মেলা বন্ধ করায় সুন্দরবনে এসময় পূর্বের মতো হরিণ শিকারের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং সুন্দরবনের পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি।

বনমন্ত্রী বলেন, সরকার সুন্দরবনে স্মার্ট পেট্রোলিং ব্যবস্থা চালু করেছে এবং এর মাধ্যমে সুন্দরবনের বিভিন্ন অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য সফলতা পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত স্মার্ট পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে ২ হাজার ৪৯৮ জন অপরাধীকে আটক এবং ১১৬৯টি ট্রলার বা জলযান জব্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সুন্দরবনে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী, সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ৪টি নতুন পুকুর খনন এবং ৮৪টি বিদ্যমান পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে। সুন্দরবনের ভেতরে বন বিভাগের বিভিন্ন ক্যাম্প, স্টেশন, রেঞ্জে অকেজো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুন: স্থাপন করা হয়েছে। সহব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ, ইকোলজিক্যাল মনিটরিংয়ের ফ্রেমওয়ার্ক প্রস্তুত এবং টহলের জন্য জলযান ক্রয় করা হচ্ছে। ইকোটুরিজম সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে কাজ চলমান আছে।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ সুন্দরবনের অধিকতর টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে সুন্দরবনের ভূমি ও সামুদ্রিক ব্যবস্থার বাস্তুসংস্থান উন্নয়নে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা অনুযায়ী আরও গবেষণা পরিচালনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য, বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকায় ভবিষ্যতের সমস্ত শিল্প কারখানা ও অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ কালে সুন্দরবনের ওপর প্রভাব মূল্যায়নে বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সুন্দরবন এবং এর বাঘ সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী আমাদের জাতীয় সম্পদ ও অহংকার। সুন্দরবনের সুরক্ষা ও উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ অব্যাহতভাবে বাড়ানো হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গরিবের স্বপ্নেই থাকে ইলিশ

কেউ ছাই দেওয়া হাত থেকে বের হতে পারবে না : উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন

বাংলাদেশে তিন বছরে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশে

রুট ১৩ হাজার রান ছুঁতেই মুখ খুললেন শচীন

‘উপদেষ্টা মাহফুজের ওপর হামলা হয়নি, কনস্যুলেট অফিস ভাঙচুর হয়েছে'

১৫০ টাকায় দেখা যাবে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস টি-টোয়েন্টি ম্যাচ

সাব্বিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ বিসিবির আকুর

জিয়ার সমাধিতে ডা. সাবরিনার শ্রদ্ধা, যুবদল সভাপতির ক্ষোভ

শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিতর্ক, অর্থপাচার বিরোধী অভিযানে চাপ

অভিনেত্রী জাহানারা ভূঁইয়া মারা গেছেন

১০

ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখা ড্যাবের নতুন দায়িত্বে ডা. ফারুক

১১

এনসিপির আরও চার নেতার পদত্যাগ 

১২

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিসের শ্বশুর লুৎফর রহমান

১৩

ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণার বিধিমালা প্রকাশ

১৪

হাসনাতকে ‌‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বললেন রুমিন ফারহানা

১৫

বিজিবির কাছে ৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

১৬

চুরির অভিযোগ, গণপিটুনিতে যুবক নিহত

১৭

সংবিধানের মূলনীতি থেকে আমরা সরে যাচ্ছি : ড. কামাল হোসেন

১৮

রাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকারের দাবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১৯

চট্টগ্রামের মিষ্টি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, মধুবন ফুডকে জরিমানা

২০
X