শত চেষ্টার পর ট্রেনে টিকিটবিহীন যাত্রী কমানো যাচ্ছে না। এক ট্রেনেই শনাক্ত হয়েছে ২০০ জন টিকিট ছাড়া যাত্রী। আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। তাদের থেকে জরিমানা আদায় হয়েছে ৬০ হাজার টাকার বেশি।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) মধ্য রাতে ট্রেনটিতে থাকা রেলওয়ে পশ্চিমের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার ‘জেনারেল ম্যানেজার ওয়েস্ট-বাংলাদেশ রেলওয়ে’ ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে বলা হয়, ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর থেকে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। অনেক যাত্রী ভুল করে এসি কোচে উঠে পড়ায় তাদের নন এসি কোচে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। বিনাটিকিটের যাত্রীদের দৌরাত্ম্য কমেনি, তাদের প্রথম পছন্দ এসি চেয়ার। আসনবিহীন টিকিট কেটে এসিতে অবস্থান করার স্বপক্ষে তাদের যুক্তির যেন শেষ নেই। আমার ভাই যুগ্ম সচিব, আমি রেলেওয়ের জিএম-এর আত্মীয়, আমার ভাই ট্রেন চালায়। কেউ কেউ টেলিফোন এগিয়ে দেন, বিশ্বাস না হলে একটু কথা বলেন। চক্ষু বুজে সসম্মানে তাদের বের করে দেওয়া হলো। তবে চেকিংকালে নন এসিতে ভিড়ের মধ্যে অন্যরা ঢুকবে কি না দ্বিধান্বিত ছিলেন, কিন্তু জিএম ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পরায় সবাই আমাকে অনুসরণ করতে বাধ্য হলো।
নাম করা এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ ছাত্রকে টিকেটবিহীন আবিষ্কার করার কথা জানিয়ে স্ট্যাটাসে বলা হয়, তাদের প্রতি সেমিস্টারে টিউশন ফি বাবদ ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়, নিঃসন্দেহে স্বচ্ছল; কিন্তু টিকেটের পয়সা নেই। ১৮০০ টাকা ভাড়ার জায়গায় ৭০০ টাকা দিয়ে দর কষাকষি শুরু। পরে ১৫০০ টাকায় রফা। ২০ মিনিট লস্ট। আরও দুই জন যাত্রী পেলাম খুবই ভদ্র, কিন্তু ভাড়ার টাকা নাই। দুই হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে জ্যাকেট কেনা ও পরবর্তীতে হোটেলে খেতে গিয়ে টাকা শেষ। যাবেন বড়াল ব্রিজ। এদের ভাবখানা, এরা রেলের বড় কুটুম, টিকেট লাগবে না।
দুজন যাত্রী রাজনৈতিক পরিচয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, বারবার বলছিলেন টাকা কোনো বিষয় না, কিন্তু পকেট থেকে ভাড়া বের করছিলেন না। … একপর্যায়ে উচ্চস্বরে ধমক দিতেই তিন পকেট থেকে মোট ৫০০ টাকা বের করলেন, কিন্তু দরকার ৮০০ টাকা। বিকাশে টাকা আনতে বললাম। এইবার মনে হলো ঠোঁট শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। এরা সব সময় ভাবে চলে। নানা পরিচয়ে টিটিইদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আজকের টিকিটবিহীন যাত্রী শনাক্ত হলো ২০০ জন। এদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া বাবদ আদায় করা হলো ৬০,৫৩০ টাকা। আমার সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে সিনিয়র সহকারী সংকেত প্রকৌশলী (পাকশী) উপস্থিত ছিলেন বলেও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন